বাংলা হান্ট ডেস্ক: মার্কিন আর্থিক গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের পর আদানি গ্রুপের (Adani Group) শেয়ারের দাম ক্রমাগত কমছে। পরপর দু’দিনের পতনের পর আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির মার্কেট ক্যাপ কমেছে ৪ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা। এমনকি, সপ্তাহের শেষ দিনে আদানি গ্রুপের তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানির শেয়ারের দামেও ব্যাপক পতন পরিলক্ষিত হয়েছে। এর পাশাপাশি বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (BSE) সেনসেক্সেও ১১০০ পয়েন্টের বেশি পতন দেখা গিয়েছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, আদানি গ্রূপের কোম্পানিগুলির শেয়ারের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। মূলত, স্টক মার্কেট বন্ধ হওয়ার ঠিক আগে, আদানি ট্রান্সমিশন ও আদানি অ্যান্ড আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ার বিকাল ৩ টেয় ২০ শতাংশ কমেছে। পাশাপাশি, আদানি গ্রিন এনার্জি এবং আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারেও ১৯ শতাংশের বেশি পতন পরিলক্ষিত হয়েছে। এছাড়াও, আদানি পোর্টের শেয়ার ১৭.৭ শতাংশ, অম্বুজা সিমেন্টের শেয়ার ১৭.৩ শতাংশ এবং ACC সিমেন্টের শেয়ার ১৪.৩ শতাংশ কমেছে। শুধু তাই নয়, আদানি পাওয়ার এবং আদানি উইলমারের শেয়ারও ৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
এদিকে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের পরে গত ২৫ জানুয়ারিই আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির মার্কেট ক্যাপ ১ লক্ষ কোটি টাকা কমেছে। এই প্রসঙ্গে বিজনেস টুডের রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, গত ২৭ জানুয়ারি আদানি গ্রুপের ১০ টি শেয়ারের মার্কেট ক্যাপ ১২ শতাংশ কমে তা ১৬.৮৮ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। এদিকে, ২৪ জানুয়ারি তা ছিল ১৯ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, দু’দিন আগে আসা এই রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, আদানি গ্রুপ বহু বছর ধরে স্টক ম্যানিপুলেশন (শেয়ারে কারচুপি) এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছে। পাশাপাশি, এটাও বলা হয়েছিল যে, আদানি গ্রুপ ট্যাক্স হেভেনে কোম্পানি স্থাপনের সুবিধার অযাচিত সুবিধা নিয়েছে।
যদিও, আদানি গ্রূপ এই রিপোর্টকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্ট আসার পরে, আদানি গ্রুপ বলেছে যে, তারা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, তারা তাদের দাবিতে অনড় থেকে আইনি পদক্ষেপের জন্যও প্রস্তুত রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ দাবি করেছে যে, রিপোর্ট প্রকাশের আগে, তারা আদানি গ্রুপের সাথে কাজ করা বেশ কয়েকজন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ সহ কয়েকজন ব্যক্তির সাথে কথা বলেছে। এদিকে, এই রিপোর্ট সামনে আসার পরেই ফোর্বসের বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় সাত নম্বরে নেমে এসেছেন গৌতম আদানি। দীর্ঘ সময় পর, আদানির মোট সম্পদ ১০০ বিলিয়ন ডলারের (৮ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা) নিচে নেমে এসেছে। প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত গৌতম আদানির মোট সম্পদের পরিমান কমে হয়েছে ৯৬.৬ বিলিয়ন ডলার।