বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে ধুন্ধুমার দশা বঙ্গে। সম্প্রতি দুর্নীতি মামলায় ইডির জালে ধরা পড়েছে তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। তারপর থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে উঠে আসছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরির নাম করে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন কুন্তল, এমনটাই দাবি ইডির। তবে কিভাবে তিঁনি সেই চাকরি পাইয়ে দিতেন অযোগ্য প্রার্থীদের? জানা গিয়েছে, পর্ষদের সাইট হ্যাক (Website Hack) করেই চাকরির টোপ দিতেন যুবনেতা।
আসল হোক বা ভুয়ো, প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেতে হলেই যেটা অবশ্যক তা হল টেট পাশের সেই ‘সার্টিফিকেট’ বা শংসাপত্র। যেটা টাকার বিনিময়ে হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে ছিল না তাদের নাম। ইডি সূত্রে দাবি, ওই প্রার্থীদের নাম ওয়েবসাইটে না থাকার কারণ হল, পর্ষদের ওয়েবসাইট হ্যাক করে নকল শংসাপত্র বানানো হয়েছিল এবং সেই সাইবার অপরাধের মূল মাথা ধৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ।
ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর, নকল ভুয়ো নিয়োগপত্র বিনিময়েই যুবনেতা প্রায় তিন কোটি ২৫ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। ইডির আরও দাবি, বেসরকারি কলেজ সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডলের মাধ্যমে ৩২৫ জনের কাছ থেকে প্রাথমিকে নিয়োগের অগ্রিম টাকা তোলেন কুন্তল। মাথাপিছু এক লক্ষ টাকা অর্থাৎ মোট তিন কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিল কুন্তল। তবে সেই ৩২৫ জনের মধ্যে চাকরি হয়েছে মাত্র ২৭ জনার। অন্যদিকে, ওই ৩২৫ জনের কাছেই রয়েছে টেট পাশের ‘শংসাপত্র’, যা ডাউনলোড করা হয়েছে পর্ষদের ওয়েবসাইট থেকেই।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, হাতে ‘শংসাপত্র’ সত্ত্বেও পর্ষদের ওয়েবসাইটে নাম না আসায় বিচলিত হয়ে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। বহুদিন দিন অপেক্ষা করেও নিয়োগপত্র না-আসায় অযোগ্য প্রার্থীদের একাংশ কুন্তলের উপর চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। চাপ বর্তায় তাপসের উপরেও। ইডির অভিযোগ, কুন্তলের দুই কর্মচারী এই কাজে তাকে সাহায্য করত। কয়েক ঘণ্টার জন্য পর্ষদের ওয়েবসাইট ‘হ্যাক’ করে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হত সেই তালিকায়।
ইডির আরও দাবি, তদন্তে তারা জানতে পেরেছে, অযোগ্য প্রার্থীদের বয়ান অনুযায়ী ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি ফ্ল্যাটের অফিসে ডাকা হত। তারপর কম্পিউটারে ওয়েবসাইট খুলে দেখানো হত যে, অযোগ্য প্রার্থীদের নাম টেট পাশের তালিকায় আছে। বিশ্বাস অর্জন করা হত তাদের। সেখান থেকেই ‘নকল’ সার্টিফিকেটের প্রিন্ট-আউট তাদের হাতে তুলে দেওয়া হত। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, বর্তমানে এরূপ বহু তথ্য তাদের হাতে এসেছে যার ওপর ভিত্তি করে দুর্নীতির কিনারা করতে চাইছেন তারা।