ভয়ঙ্কর সব পারমাণবিক ক্ষেপনাস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে চিন, ভয়ে কাঁটা হয়ে জানাল আমেরিকা

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের (India) সঙ্গে চিনের (China) ‘সাপে নেউলে’ সম্পর্ক। মাঝে মধ্যেই সীমান্ত লঙ্ঘন করে ভারতে ঢুকে আসে চিনের সেনা। যা নিয়ে একাধিক বার ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত হয়েছে তাদের। ভারত-চিন সম্পর্ক প্রায়ই শিরোনামে থাকে। এমনকী চিনের অস্ত্রভাণ্ডার নিয়েও নানা ধরনের কথা শোনা যায় মাঝে মধ্যেই। এ বার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও চিনের ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্রগুলিকে সবচেয়ে সক্রিয় এবং বৈচিত্র্যময় আখ্যা দিল। 

আমেরিকার বিশ্বাস, চিনের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপনাস্ত্র রয়েছে। তাদের কাছে ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র সহ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অবধি রয়েছে। এই ক্ষেপনাস্ত্রগুলি পারমাণবিক অস্ত্র বইতেও সক্ষম। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অগস্টে মার্কিন কংগ্রেস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি (Nancy Pelosi) তাইওয়ান সফর করেছিলেন। সেটি মোটেও ভাল চোখে দেখেনি চিন। সেই থেকেই আমেরিকার প্রতি তারা যথেষ্ট আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে।

China Weapons

মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন (Pentagon) অনুযায়ী, ২০২১ সালে মোট ১৩৫টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা করেছে চিন। আমেরিকা জানিয়েছে, এত বেশি সংখ্যক ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র বাকি বিশ্বের ক্ষেপনাস্ত্রের চেয়ে অনেকটাই বেশি। যদিও ২০২২ সালে কম সংখ্যক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা করেছে চিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে আমেরিকার দু’টি প্রধান প্রতিপক্ষ রয়েছে। রাশিয়া এবং চিন। 

এই দু’টি দেশই পরমাণু অস্ত্র সম্পন্ন। এদিকে রাশিয়া ও চিনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এর ফলে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে বাইডেনের (Joe Biden) দেশ। জানা গিয়েছে, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) পারমাণবিক শক্তিতে প্রচুর বিনিয়োগ করছে। আধুনিকায়নের আগে করা সব প্রচেষ্টাই এগিয়ে নিয়েছে চিন। এমনই মনে করছে পেন্টাগন। পাশাপাশি, স্থল, বায়ু ও সমুদ্রে একটি পারমাণবিক কর্ডনও তৈরি করেছে শি জিনপিংয়ের দেশ।

china ballistic missile

ব্রিটেনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (IISS) মতে, পারমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকে নিজেদের আরও মজবুত করতে সব রকম পদক্ষেপ করছে চিন। কয়েক দশক পর এই পদক্ষেপ করেছে তারা। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের (Xi Jinping) মতে, দেশের সম্মান বাড়াতে পরমাণু অস্ত্র থাকা জরুরি। এর ফলে তারা এখন আরও বেশি করে পারমাণবিক ক্ষেপনাস্ত্র বানানোর চেষ্টা করে চলেছে।

পেন্টাগনের মতে, চিনের কাছে ৪০০-রও বেশি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। বাকি বিশ্বের জন্য এটি খুবই চিন্তার বিষয় বলে মত তাদের। ২০৩৫ সালের মধ্যে রকেট ফোর্সের আধুনিকরণ করতে চায় চিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই সময়েই মধ্যে চিনের কাছে ১৫০০ পারমাণবিক অস্ত্র থাকবে। তাঁদের অনুমান, আগামী দিনে চিনের সঙ্গে বিবাদ আরও বাড়বে আমেরিকার। এমনকী যুদ্ধ অবধি হতে পারে। এই অবস্থায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে চিন।

china ballistic missile

চিনের রকেট ফোর্সে স্বল্প রেঞ্জের ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে DF-15, যার রেঞ্জ ৭২৫ থেকে ৮৫০ কিলোমিটার। এছাড়াও রয়েছে DF-16, যার রেঞ্জ ৭০০ কিলোমিটার। চিন ইতিমধ্যেই হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে DF-17। একটি রিপোর্ট অনুসারে, চিনের কাছে ৯০০টি মিডিয়াম ও ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জের ক্ষেপনাস্ত্র রয়েছে। এছাড়াও CJ-10 নামক একটি ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র রয়েছে। এটির রেঞ্জ ১৫০০ কিলোমিটার। 

এগুলির পাশাপাশি তাদের কাছে রয়েছে ১৫০০ কিলোমিটার রেঞ্জের DF-21। চিনের এই বাহিনীতে ২০০০ কিলোমিটার রেঞ্জের DF-100’ও শামিল রয়েছে। উল্লেখ্য, হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল ক্ষেপনাস্ত্র DF-17’কে ২০২০ সালে বাহিনীতে যোগ করা হয়। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে বিদেশি সেনা ও নৌবাহিনীর ঘাঁটি ধ্বংস করার কাজে এটিকে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমেরিকার মতে, এই ক্ষেপনাস্ত্রটি পারমাণবিক অস্ত্র বইতে সক্ষম। 

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর