‘আমাদের হাত পা বেঁধে পশুদের সামনে ফেলে দেয়”, পেশোয়ার বিস্ফোরণের পর আতঙ্কে পাকিস্তান পুলিস

বাংলা হান্ট ডেস্ক : পেশোয়ারে বিস্ফোরণের পর রীতিমতো সন্ত্রস্ত পাকিস্তান পুলিস (Pakistan Police)। তালিবানের এই গণসংহারের ঘা কিছুতেই ভুলতে পারছে না সেদেশের পুলিস বিভাগ। আর হবে নাই বা কেন! কাউকে বার্তা দেওয়া নয়। বরং পুলিসের উপর বদলা নিতেই পাকিস্তানের মসজিদে বিস্ফোরণ (Peshawar Blust) ঘটিয়েছে জঙ্গিরা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, তালিবান (Taliba) নেতার মৃত্যুর বদলা এবং জঙ্গিবিরোধী কার্যকলাপ চালানো পুলিসের মনোবল ভেঙে দেওয়া। এমনটাই মনে করছে পেশোয়ারের পুলিস প্রশাসন। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০০ পার করেছে মৃত্যুর সংখ্যা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিস আধিকারিক জানান, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইতে আমরা প্রথম সারিতে রয়েছি। আমরাই জঙ্গিদের হাত থেকে স্কুল, কলেজ, অফিসকে রক্ষা করি। আজ আমরাই অসহায় বোধ করছি। খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকাতেই আফাগানিস্তান সীমান্ত। এই এলাকার রাজধানী পেশোয়ারেই হয়েছে বিস্ফোরণ। প্রতিদিন এই এলাকার পুলিস আধিকারিকের প্রাণ যায় তালিবানের সঙ্গে সংঘর্ষে।

অপর এক পুলিস আধিকারিক জানান, ‘আমাদের বলা হল গোলাগুলি এবার বন্ধ হবে। শান্তি আসবে এলাকায়। পরক্ষণেই বলা হল যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে। আমরা যখন বাড়ির বাইরে পা দিই তখন আমরা জানি না আমরা নিশানা হয়েছি কিনা। আজ অন্য কেউ মারা গেছে। কাল আমরাও মারা যেতে পারি।’ আর এক পুলিসকর্মী বলে, ‘আমরা যখন ডিউটিতে আসি তখন বাড়ির সকলের থেকে বিদায় নিয়ে আসি। কারণ আমরা জানি না আমরা আদৌও বাড়িত ফিরব কিনা।’

untitled design 15

প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিস্ফোরণের সময় মসজিদ এলাকায় অন্তত চারশো জন পুলিসকর্মী হাজির ছিলেন। নমাজ পড়ার সময় হওয়ায় আরও বহু পুলিশকর্মী এ দিক ও দিক থেকে এসেছিলেন মসজিদে। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে জানিয়েছেন, মৃতদের মধ্যে ৯৭ জনই পুলিস আধিকারিক।

পেশোয়ারে পাক পুলিসের সদর দফতর লাগোয়া মসজিদে বিস্ফোরণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কয়েক শো পুলিসকর্মী। সেই সময় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জঙ্গিদমন অভিযানে যাওয়া পুলিস বাহিনীর মনোবল ভাঙাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। পেশায়ার পুলিসের প্রধান মহম্মদ ইজাজ় খান সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘জঙ্গিদমন কার্যকলাপে আমরা প্রথম সারিতে রয়েছি। এ জন্যই আমাদের নিশানা করা হল। উদ্দেশ্য ছিল, বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়া।’ পুলিস সূত্রে খবর, পাকিস্তানের তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠী ছাড়াও স্থানীয় ভাবে তৈরি হওয়া ‘ইসলামিক স্টেট’-এর কোনও সংগঠনও বিস্ফোরণের পিছনে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর