বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় আদালতে তোলা হয় পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya)। সশরীরেই মানিককে হাজির করা হয় আদালতে। নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্য দুই অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও পেশ করা হয় আদালতে। ভার্চুয়ালি হাজিরা দেন তারা। তবে এদিন মানিক আদালতে ঢোকার মুখেই ঘটল বিপত্তি।
আদালত চত্বরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নে মেজাজ হারালেন তৃণমূল বিধায়ক। সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বললেন, ” আগে ডিভিশন বেঞ্চের অর্ডার নিয়ে আয়…..।” প্রসঙ্গত, এদিন আদালতেও উচ্চ স্বরে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন মানিক। ভরা এজলাসে জোর গলায় মানিক বলেন, ‘‘বলা হচ্ছে, লন্ডনেও নাকি একটা বাড়ি আছে আমার। আমি বলছি, সত্যিই যদি লন্ডনে বা অন্য জায়গায় আমার বাড়ি থাকে, তবে আমাকে ঝুলিয়ে দিক।’’ পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তাকে নিয়ে যা যা হচ্ছে তাতে তার সামাজিক সম্মান নষ্ট হচ্ছে বলেও আদালতে জানান মানিক।
লন্ডনে তার বাড়ি আছে বলে সম্প্রতি যে খবর সামনে এসেছে সে প্রসঙ্গে মানিক বলেন, ‘‘১৯৮৯ সালে যাদবপুরে একটা ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। পরিবার বড় হওয়ার পর বড় ফ্ল্যাট নেওয়া হয়। এ ছাড়া নদিয়াতে বাড়ি আছে। আমি সিবিআইকে তো সবই জানিয়েছি।’’ এরপর নিজের পরিস্থিতি ও হতাশার কথা তুলে ধরেন আদালতে। বলেন, ‘‘আমার সামাজিক সম্মান চলে যাচ্ছে। আমি কত জ্বলবে বলুন। আমি কারও নাম নিচ্ছি না। আমাকে ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হোক। ”
অন্যদিকে জোড়া পাসপোর্ট প্রসঙ্গ তুলেও মানিক বলেন, ‘‘আমি কি পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষকে ঠকিয়েছি? একটা পাসপোর্টের উপর আরেকটা পাসপোর্ট আছে? দু’টো পাসপোর্ট থাকলে সরকার দেখেনি? বাড়িতে থাকলে এর প্রমাণ দিতাম। কিন্তু আমি তো সেলে।’’ এদিন এজলাস থেকে বেরিয়েই ক্ষোভ, আক্ষেপে ফেটে পড়েন মানিক। পাশাপাশি হতাশার সুর শোনা যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির গলায়।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার এক শুনানিতে মানিক ভট্টাচার্য প্রসঙ্গে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মানিকের জোড়া পাসপোর্ট প্রসঙ্গ তুলে ছিঃ ছিঃ করে ওঠেন বিচারপতি। পাশাপাশি সিবিআইকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন ‘‘কত বার লন্ডনে গিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য? তার বাড়ির ঠিকানা জানেন? আমি বলতে পারি। শুনবেন? লন্ডনে তার বাড়ির পাশে কার বাড়ি জানেন? আমি জানি।’’ অনেকেরই ধারণা এদিন বিচারপতির তোলা প্রসঙ্গ গুলিকে ধরেই মুখ খোলেন মানিক।