বাংলাহান্ট ডেস্ক: তুরস্ক (Turkey) ও সিরিয়ার (Syria) ভয়াবহ ভূমিকম্পে (Earthquake) মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ঘটনার সাতদিন কেটে গিয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৫ হাজারের গণ্ডি। মনে করা হচ্ছে, আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের ভয়াবহতা ঠিক কতটা তা ধ্বংসের ছবি থেকে আঁচ করাই যায়। এখনও ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকে চাপা পড়ে রয়েছেন। ভারত-সহ একাধিক দেশ হাত লাগিয়েছে উদ্ধারকাজে।
ভারতীয় সেনার (Indian Army) ৯৯ জন সদস্যের একটি দল গিয়েছে তুরস্কে। সেই দলেই রয়েছেন রাহুল চৌধুরী। দুর্গতদের উদ্ধার করতে গিয়ে দেশ থেকে পেলেন খুশির খবর। তুরস্কের ধ্বংসস্তূপের নীচে প্রাণের খোঁজ করছিলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) হাপুরের বাসিন্দা রাহুল। অন্য দেশে গিয়ে যখন প্রাণের সন্ধান করছেন, তখনই জানতে পারলেন নিজের বাবা হওয়ার খবর। তুরস্কে ভারতের পাঠানো দলে নাম ছিল রাহুলের।
কিন্তু সেই সময় তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁকে একা ফেলে ভিন দেশে যেতে চাইছিলেন না রাহুল। তবে মানুষের প্রাণরক্ষা হল তাঁর কর্তব্য। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন ৮ ফেব্রুয়ারি সিজার হবে রাহুলের স্ত্রীর। কিন্তু সেই সময়েই তাঁর কাঁধে এসে পড়েছিল দেশের জন্য কাজের দায়িত্ব। পরিবার না দেশ- কোনটা বেছে নেবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন রাহুল।
যখন উদ্ধারকারী দলে রাহুলের নাম আসে, তখন ঊর্ধতন অফিসারকে সব কিছু খুলে বলেন তিনি। সেই অফিসার তখন রাহুলকে স্ত্রীয়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা মতো স্ত্রীয়ের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল। স্ত্রী জানান, রাহুল যেন দেশকেই প্রথমে বেছে নেন। তারপর তিনি যেন পরিবারের কথা চিন্তা করেন। স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর আশ্বস্ত হয়ে রওনা দেন তুরস্কের উদ্দেশ্যে।
রাহুল জানিয়েছেন, “তুরস্কের বিমানে ওঠার সময় জানতে পারি স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” তুরস্কের মাটিতে যখন নামেন, রাহুল খবর পান যে বাবা হয়েছেন তিনি। এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন রাহুলের স্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই প্রচণ্ড খুশি হন রাহুল। যখন এক দেশে খুঁজতে গিয়েছেন প্রাণের স্পন্দন, উদ্ধার করছেন দুর্গতদের। তখনই নিজের ঘর আলো করে এসেছে এক নতুন প্রাণ। সন্তানের নাম রাখা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “সহকর্মীরা বলছে ছেলের নাম যেন তুর্কি চৌধুরী রাখি।”