হাতে পেরেকবিদ্ধ ‘গীতাঞ্জলি’, সেলোটেপ দিয়ে মুখ সিল রবীন্দ্রনাথের! বাংলাদেশে এ কী অবস্থায় ‘গুরুদেব”

বাংলাহান্ট ডেস্ক: গতকাল থেকে একটি জিনিস ঘিরে তোলপাড় চলছে বাংলাদেশে (Bangladesh)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) একটি মূর্তি। কিন্তু ঠিক সাধারণ মূর্তি নয়। রবি ঠাকুরের হাতে ধরা ‘গীতাঞ্জলি’ (Gitanjali) পেরেকবিদ্ধ। তাঁর মুখও সেলোটেপ দিয়ে বন্ধ করা । সাড়ে ১৯ ফুট উঁচু এই মূর্তিটি তৈরি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Dhaka University) চারুকলা অনুষদের কিছু শিক্ষার্থী। কিন্তু কেন এমন জিনিস করতে গেলেন তাঁরা? এটি আসলে লেখকদের ‘মুক্তকণ্ঠ রোধ’-এর বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদ। 

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ২১ ফেব্রুয়ারি। বিশ্বজুড়ে সেদিন পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (International Mother Language Day)। বাংলাদেশে এখন চলছে ‘অমর একুশে বইমেলা’। কিন্তু সেখানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে লেখিকা জান্নাতুন নাঈম প্রীতির বই ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’। একইসঙ্গে আদর্শ প্রকাশনীকেও স্টল দেওয়া হয়নি সেখানে। এছাড়াও পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকির ‘শনিবার বিকেল’ নামের ছবির মুক্তি নিয়ে আপত্তি রয়েছে সেন্সর বোর্ডের। 

rabindranath thakur

এই বিষয়গুলির জন্যই সে দেশের শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীদের একাংশের মতে, শিল্পীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলছে। এরই ‘প্রতীকী প্রতিবাদ’ হিসেবে রবীন্দ্রনাথের এই ভাস্কর্য তৈরি হয়েছে।  রাজু ভাস্কর্যের পাশে গোটা ফেব্রুয়ারি জুড়েই এই মূর্তিটি রাখা হবে। এমনই জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। সাড়ে ১৯ ফুট উচ্চতার রবীন্দ্রনাথের মূর্তিটি বাঁশ, থার্মোকল আর বইয়ের কাগজ দিয়ে তৈরি। 

rabindranath protest

এর সঙ্গে রয়েছে একটি চার ফুটের বেদি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের পড়ুয়া শিমুল কুম্ভকার বলেন, “এখন পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে। বই ও লেখা সেন্সরের কোপে পড়েছে। এরই প্রতিবাদ হিসেবে এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।” বইমেলায় এমন মূর্তি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন সাধারণ মানুষও।

বই কিনতে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রথমে এই ভাস্কর্য দেখে কিছু বুঝতে পারিনি। কিন্তু পরে বুঝতে পারি কী বলা হচ্ছে। প্রতিবাদ করতেই এই ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবাদের এক অভিনব ভাষা বেছে নেওয়া হয়েছে।” কিন্তু এই ভাস্কর্যের স্থায়িত্ব বেশিক্ষণ হয়নি। দ্রুতই সেটি সেখান থেকে সরিয়ে ফেলেন কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে আবারও প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বুদ্ধিজীবী মহল। ভাস্কর্যের স্থানে ব্যানার লাগানো হয়। তাতে লেখা ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ’। 

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর