বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের বিশ্বের দরবারে শোনা গেল ভারতের (India) গুণগান। আরও একটা হিরোশিমা নাগাসাকি (Hiroshima-Nagasaki) হতে দেয়নি ভারত। বিশ্ববাসী হয়ত কোনও দিন ভুলতে পারবে না ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি। ওই দিনই ইউক্রেনে অতর্কিতে হামলা করে রাশিয়া । রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) হয়ত মনে করেছিলেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পুরো দেশ দখল করে ফেলবেন। রাশিয়ার অধীনেও নিয়ে আসতে পারবে তাঁর শক্তিশালী সেনা। তবে তিনি যে পুরোপুরি ভুল ছিলেন, তা বোঝা যায় কয়েক মাসের মধ্যেই। গতকাল ছিল এই যুদ্ধের বর্ষপূর্তি এখনও চলছে লড়াই।
আমেরিকা ও পশ্চিমের রাষ্ট্রগুলি থেকে পাওয়া হাতিয়ারের বলে রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনা। এই পরিস্থিতিতে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই পারমাণবিক যুদ্ধের একটি সম্ভাবনা দেখা দেয়৷ রাশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ইউক্রেন নাকি নিজেরাই পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাশিয়ার ঘাড়ে দোষ চাপানোর ফন্দি এঁটেছে। এদিকে ইউক্রেনের দাবি ছিল, রাশিয়ার এই ভিত্তিহীন। বাস্তবে রাশিয়া পারমাণবিক হামলার করার একটা অজুহাত তৈরি করার চেষ্টা করছে। জানা যায়, পুতিন সেই সময় রুশ পারমাণবিক বাহিনীকে তৈরি থাকতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন। তখন রুশ সেনাকে কার্যত পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে পারমাণবিক হামলা করা থেকে নাকি আটকে ছিল ভারত ও চিন। এমনই জানালেন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
ব্লিনকেন গতকাল বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর ভারত ও চিনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধক্ষেত্রে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার আটকাতে সাহায্য করে থাকতে পারে এই প্রভাবই। রাশিয়ার ওপর যেসব দেশের প্রভাব রয়েছে, আমরা সেই সব দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম যাতে পুতিনের সঙ্গে কথা বলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে তাদের আপত্তির জানায়। বর্তমানে চিন ও ভারতের মতো দেশের প্রভাব রয়েছে রাশিয়ার ওপর। আমরা তাদের সাফল্যের সঙ্গে বোঝাতে পেরেছিলাম যে পুতিনের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলতে হবে। আমরা জানি, রাশিয়াকে তারা আমাদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, ভারত এবং রাশিয়া সরাসরি ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার সমালোচনা কখনও করেনি। ভারত যুদ্ধের বিরোধিতা বরাবরই করে এসেছে। চিন কিছুটা রাশিয়া ঘেঁষা অবস্থান গ্রহণ করেছে এতে। তবে ভারত এবং চিন, দুই দেশই বারবার আলোচনার টেবিলে বসার দাবি জানিয়েছে। তবে রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়া বিরোধী প্রস্তাবে মাত্র কয়েকবারই ভোট দিয়েছে ভারত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাশিয়া প্রসঙ্গে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে ভারত।
এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব কিছুটা হলেও ‘অসন্তুষ্ট’ ছিল ভারতের ওপর। তবে মার্কিন বিদেশ সচিব গতকাল স্বীকার করেন যে ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক বহুবছরের পুরনো। এর সঙ্গে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কও খুবই ভালো। তিনি জানান, ‘বহু বছর ধরে রাশিয়া থেকে অস্ত্র এবং সামরিক ক্ষেত্রে সাহায্য পেয়ে এসেছে ভারত। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা দেখেছি যে রাশিয়া থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরছে ভারত। বদলে আমাদের বা ফ্রান্সের মতো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করছে ভারত।’