বাংলাহান্ট ডেস্ক: তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে দিন দিন অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে পাকিস্তানের (Pakistan)। বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির হার চলে গিয়েছে ৪০ শতাংশের কাছাকাছি। এখনও পাকিস্তানকে ঋণ দিতে চাইছে না আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)। প্রশ্ন উঠছে, এই পরিস্থিতিতে কী করবে পাকিস্তান? কী ভাবে বিপর্যয়ের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাবে তারা?
জানা গিয়েছে, পুরোপুরি দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচাতে পাকিস্তানকে ৭০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে চিন। কিন্তু পাকিস্তানের এই মিত্র দেশ কী কী শর্ত দিয়েছে, তা প্রকাশ্যে আসেনি। যদিও শোনা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shahbaz Sharif) গদি ছাড়তে পারেন। অর্থাৎ পাকিস্তান তাদের প্রধানমন্ত্রীকে হারাতে পারে। এত কিছুর মধ্যে দেশকে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচাতে উপায় ভাবা হচ্ছে।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা তিনটি বিকল্প বাতলেছেন। প্রথমত একটি জাতীয় সরকার গঠন করা। দ্বিতীয় বিকল্প, একটি টেকনোক্র্যাট সরকার তৈরি করা। এখানে দেশের কিছু বাছাই করা বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, অর্থনীতিবিদ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। তাঁরাই দেশ চালানোর জন্য যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন। তৃতীয় বিকল্প হিসেবে ফের সামরিক শাসন ভাবা হয়েছে।
গোটা ঘটনা শুরু হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। ইমরান খানের দলের এক নেতা আসাদ কৈসর সাংবাদিক বৈঠকে এই তিন বিকল্পের কথা জানান। তাঁর কথায় সমর্থন জানান নওয়াজ শরিফ ও জারদারির দলের কিছু নেতা। সম্প্রতি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইলও এই বিকল্পগুলির সমর্থন করেন। এই তিনটি বিকল্পেরই নানা রকম সুবিধা অসুবিধা রয়েছে।
যেমন একটি জাতীয় সরকার গঠনে একদম রাজি নন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর মতে, বিপক্ষ চোর-ডাকাতে ভরা। দেশের সব বড় দল মিলে সরকার গঠন করলে সেটিকে জাতীয় সরকার বলা হয়। টেকনোক্র্যাট সরকারের প্রস্তাবও খারিজ করেছে ইমরান খানের দল। তাদের দাবি, এর ফলে দেশে মূল্যবৃদ্ধি আরও বাড়বে। এমনকী গৃহযুদ্ধও বেঁধে যেতে পারে।
সামরিক আইনের ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ-সহ কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাহায্য পাবে না পাকিস্তান। কারণ পশ্চিমী দেশগুলি সামরিক আইনের সমর্থন কর না। একইসঙ্গে পাকিস্তানের বিভিন্ন মিত্র দেশ তাদের শর্ত দিয়েছে যে আইএমএফ-এর সাহায্য না আসা অবধি তারাও কোনও রকম আর্থিক সাহায্য করবে না। ফলে সামরিক আইন লাগু হলে পাকিস্তানের দেউলিয়া হয়ে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।