বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যত দিন এগোচ্ছে ততই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে দূষণের (Pollution) হার। যার ফলে প্রভাবিত হচ্ছে পরিবেশও। এমনকি, বাড়ছে অসুস্থতার ঘটনাও। এদিকে, এই দূষণের পেছনে একটি বড় ভূমিকা পালন করে প্লাস্টিক (Plastic)। এমতাবস্থায়, দূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও এখনও ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি। মূলত, মানুষের সার্বিক সচেতনতাই এক্ষেত্রে প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা দেশের এমন একটি গ্রামের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যেটি প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে এক অনন্য লড়াই শুরু করছে। মূলত, জম্মু ও কাশ্মীরের একটি গ্রামে প্লাস্টিকের বদলে সোনা পাচ্ছেন মানুষেরা।
গ্রামের সরপঞ্চের অভিনব অভিযান: মূলত, আমরা যে গ্রামটির কথা জানাচ্ছি সেটি দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় অবস্থিত। গ্রামটির নাম হল সাদিওয়ারা। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় অভিনব অভিযান শুরু করেছেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সরপঞ্চ। পেশায় আইনজীবী ফারুক আহমেদ গণাই শুরু করেন “প্লাস্টিক দিন এবং সোনা নিন” (Give Plastic And Take Gold) কর্মসূচি। পাশাপাশি, তিনি গ্রামবাসীদের প্লাস্টিক সংগ্রহেও উদ্বুদ্ধ করেন।
প্লাস্টিক দিন, সোনা নিন: এই কর্মসূচির অধীনে যে ব্যক্তি ২০০ কেজি প্লাস্টিকের বর্জ্য সংগ্রহ করতে পারবেন তাঁকে ১ টি সোনার কয়েন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সরপঞ্চ। এদিকে, এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই প্রচারটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং গ্রামটিকে প্লাস্টিক মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
এই প্রসঙ্গে ফারুক জানিয়েছেন, “আমি আমার গ্রামে স্লোগান দিয়েছিলাম, প্লাস্টিক দিন আর পুরস্কার নিন। পাশাপাশি, নদী পরিষ্কারের অভিযানও শুরু করেছি। গ্রামবাসীরা পরিচ্ছন্নতার কাজে সাহায্য করেন। গত ৭ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক এই এলাকাকে প্লাস্টিকমুক্ত ঘোষণা করেন। আমরা যে সোনা দিচ্ছি তা প্লাস্টিক সংগ্রহ করে পাওয়া যায়। অচিরেই আমরা গ্রিন ভিলেজে পরিণত হব।” পাশাপাশি, ফারুক আরও জানিয়েছেন যে, তিনি এই অভিযানকে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত প্রতিটি জেলায় নিয়ে যাবেন।
কাশ্মীর উপত্যকার প্রথম প্লাস্টিক মুক্ত গ্রাম: ইতিমধ্যেই ফারুকের প্রচার ও প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হয়েছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে তাঁর গ্রামই কাশ্মীর উপত্যকার প্রথম গ্রাম যেটিকে প্লাস্টিক মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। যুবকরাও গ্রামের উন্নতির জন্য সরপঞ্চের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। এক সময় এই গ্রামের পাশের নদী-নালায় প্লাস্টিক বর্জ্য জমে থাকতে দেখা গেলেও, আজ এই গ্রামের চেহারা রীতিমতো পাল্টে গিয়েছে। পাশাপাশি, মহিলারাও পরিচ্ছন্নতার কাজে সাহায্য করছেন। এমতাবস্থায়, কাশ্মীর উপত্যকার এই গ্রাম আজ গোটা দেশের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।