নকশালবাড়িতে লেনিনের মূর্তি ভাঙচুর, ত্রিপুরা প্রসঙ্গ টেনে BJP-কে আক্রমণ বামেদের! পাল্টা গেরুয়া দল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিলিগুড়ির নকশালবাড়িতে (Naxalbari) রাতের অন্ধকারে ভাঙা হল লেলিনের মূর্তি (Lenin Statue)। সত্তরের দশকের নকশাল আন্দোলনের ধাত্রীভূমি বেঙ্গাইজোতে বুধবার রাতের অন্ধকারে দুস্কৃতি হানা দেয়। অভিযোগ, লেলিনের আবক্ষ মূর্তিটি অবাধে ভাঙচুর চালানো হয়। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

অন্যদিকে, ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। মূর্তি ভাঙার এই ঘটনায় ত্রিপুরা প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে আক্রমণ করেছে সিপিআইএমএল (লিবারেশন) (CPIML)। তাদের দাবি, সে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরেই যেমন লেনিনের মূর্তি ভেঙে দেওয়া হয়। ঠিক তেমনি নকশালবাড়ি আন্দোলনের স্মারক স্তম্ভটি সেখান থেকে সরিয়ে দিতেই বিজেপি (BJP) আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এমন ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।

   

উল্লেখ্য, নকশালবাড়ির বেঙ্গাইজোত এলাকায় কার্ল মার্কস, ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস, ভ্লাদিমির লেনিন, জোসেফ স্তালিন, মাও সেতুংয়ের আবক্ষ মূর্তি রয়েছে। বুধবার সকালে সেখানে লেনিন মূর্তির মুখের কিছু অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লেলিনের মূর্তি ভাঙচুর হলেও অন্যান্য কোনও মূর্তিতেই ভাঙচুর করা হয়নি। এরপরই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

মূর্তির ওপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেখানে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নকশালবাড়ি থানার পুলিশ। ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি করছেন সিপিআইএম‌এলের কর্মী সমর্থকরা। তবে এই প্রথম নয় এর আগেও বহুবার মূর্তি ভাঙার অভিযোগ রয়েছে।

গোটা এই ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছেন সিপিআইএম (এল) নেতা অভিজিৎ মজুমদার। তার অভিযোগ, ‘‘দক্ষিণপন্থী শাসকরা লেনিনের মূর্তিকেই নিশানা করছে। ত্রিপুরায় যখন বিজেপি সরকার আসে তখন ওরা লেনিনের মূর্তি ভেঙেছিল। নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি এই অঞ্চলে আরএসএসের একটা প্রভাব রয়েছে। এটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও উদ্দেশ্য আছে। নকশালবাড়ি আন্দোলনের স্মারক স্তম্ভ রয়েছে ওখানে। তারা হয়তো চাইছে না মূর্তিগুলি ওখানে থাকুক।” পাশাপাশি পুলিশের প্রশাসনের কাছে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।

cpm bjp flag

প্রসঙ্গত, বহুদিন বামশাসিত ত্রিপুরায় গতবারের নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে লেনিন, মার্কসের মূর্তি ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার সঙ্গেই বুধবারের এই ঘটনার যোগসূত্র বের করে লাল বাহিনী। এই বিষয়ে বামেদের অভিযোগ উড়িয়ে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক তথা দলের শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘মূর্তি কে ভেঙেছে তা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। তবে বিজেপি কারও দলীয় কার্যালয় বা মূর্তি ভাঙার মতো কাজ করে না। মানুষকে পাশে নিয়ে আমরা উন্নয়নের কাজ করি।”

নেতার সংযোজন, “নকশাল আন্দোলন নকশালবাড়ি থেকে শুরু হলেও এখন সেটার কোনও অস্তিত্ব নেই। বেঙ্গাইজোতের ওই জায়গায় লোকজনও এখন বেশি যান না। নকশাল আন্দোলনেরও কোনও গুরুত্ব নেই।” বামের পাশাপাশি তিনিও পুলিশ প্রশাসনকে দ্রুত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর