বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুমাস ধরে একের পর এক দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগে নাজেহাল রাজ্যের শাসকদল। দিন যত গড়াচ্ছে ততই অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলের (Trinamool Congress)। কেলেঙ্কারিতে নাম জড়াচ্ছে দলের নেতা, মন্ত্রীদের। এই আবহেই এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। দলের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ দলেরই নেতা। তুঙ্গে তরজা।
রবিবার কোচবিহারের দিনহাটা (Dinhata) বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু কনভেনশনে বক্তব্য রাখতে যান মন্ত্রী উদয়ন গুহ। সেখানে গিয়েই বোমা ফাটালেন তিনি। প্রকাশ্য জনসভায় দাঁড়িয়ে নেতা স্বীকার করে নিলেন দলের একাংশ দুর্নীতিতে জড়িত। তার এই মন্তব্যের পরই শোরগোল পরে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। তবে এবার সেই স্বীকারোক্তি খোদ শাসকদলের বিধায়কের কণ্ঠে।
ঠিক কী বললেন উদয়ন? এদিন প্রকাশ্যে মন্ত্রী বলেন, ”সততার প্রতীক নিয়ে আজ নানান কথা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছবি নিচে লিখতে পারেন সততার প্রতীক। সেটার ১০০ শতাংশ অধিকার আছে। কিন্তু, আমাদের মত কিছু উদয়ন গুহ থাকার জন্য ফ্লেক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ছবির নিচে এখন আর সততার প্রতি লিখতে পারছেন না। তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী নয়। আমরা উদয়ন গুহরা দায়ী। আমরাই একদিকে কাউকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছি, অন্যদিকে, ঘর দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছি।”
এখানেই থেমে যাননি তিনি। নিজের দলের সদস্যদেরই তুলোধোনা করে উদয়ন বলেন, ”কেউ কেউ চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে কোটিপতি হয়েছে। আবার কেউ যারা ধার দেনা করে টাকা দিয়েছে তারা বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। যারা এই অসৎ কাজ করেছে আমি যদি টিকে থাকি তাহলে এসমস্ত লোকেদের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে না। তার বিনিময়ে জন্য যদি আমার পদ যায় যাক। কিন্তু দুর্নীতি বরদাস্ত নয়।”
প্রসঙ্গত, কিছুমাস যাবৎ একাধিক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে শাসকদলের। একদিকে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন দলের বহিষ্কৃত মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষক কেলেঙ্কারি মামলাতেই জেলবন্দি তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক। জেলবন্দি পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, হুগলীর যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু ব্যানার্জী।
পাশাপাশি দুর্নীতি করে চাকরি প্রাপকদের তালিকায় একের পর এক শাসক দলের পরিজনেরা। অন্যদিকে, কেন্দ্রের আবাস যোজনাতেও বিপুল পরিমান দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দলের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে নিজের দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে পাহাড়প্রমান দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে নিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী।