বাংলাহান্ট ডেস্ক : নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) কাণ্ডে শাসকদলের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তোলপাড় শুরু হয়েছে সারা রাজ্যে। ইডি আধিকারিকরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় খানা তল্লাশি চালাচ্ছেন। বহু ক্ষেত্রেই অনুসন্ধান চালিয়ে দুর্নীতিগ্রস্তদের বাড়ি বা ফ্লাট থেকে উদ্ধার হচ্ছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি। আর এই প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের কাজেই গোয়েন্দাদের সাহায্য করছেন হুগলির (Hoogly) এক যুবক।
এবার আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন কে এই যুবক আর তিনি কীভাবেই বা দুঁদে অফিসারদেরকে সাহায্য করছেন? জানা গিয়েছে, গোয়েন্দাদের সাহায্যকারী ওই যুবকের নাম রবি পাল। তিনি এখন এলাকায় ‘দ্য কি ম্যান’ নামে খ্যাতি লাভ করতে শুরু করেছেন। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, ইডি আধিকারিকদের তদন্তের জন্য কারো বাড়িতে হানা দেওয়ার অধিকার থাকলেও তারা কিন্তু তালা বা বিভিন্ন ধরনের লকার খুলতে সক্ষম নন।
আসলে, সেইসব তালা বা লকারের চাবি গোয়েন্দাদের কাছে থাকে না। ফলে, হুগলির ‘দ্য কি ম্যান’ রবিই এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির আধিকারিকদের একমাত্র ভরসা। এখন প্রশ্ন হল কীভাবে গোয়েন্দাদের নজরে এলেন এই রবি ? জানা গিয়েছে, চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড় এলাকায় ফুটপাতেই রবির ব্যবসা চলত। এই তালা চাবির ব্যবসা করে তার ১২০ টাকার কাছাকাছি রোজকার হত।
গত শনিবার যখন ইডি আধিকারিকরা অয়ন শিলের বাড়িতে হানা দেন, সেখানে তারা একটি অত্যাধুনিক লকার দেখতে পান। সেই সময়েই রবি পাল ওই লকার অনায়াসে খুলে দেন। আর সেই লকার খুলে দেওয়ার পরেই অফিসারদের হাতে আসে অজস্র নথি। এরপরেই শান্তনু, অয়ন থেকে শুরু করে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাদের ঘনিষ্ঠদের ফ্ল্যাট, বাড়ি এবং আবাসনে অত্যাধুনিক লকার খোলার দায়িত্ব রবির উপর এসে পড়ে।
সূত্রের খবর, সারাদিনে ছয় সাতটি তালা খোলার পরিবর্তে কাজের শেষে তদন্তকারী আধিকারিকরা তার হাতে তুলে দিয়েছেন ১৪০০ টাকা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত যখন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের রাতের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে, ঠিক তখনই আর্থিক দৈন্যতা একটু একটু করে কেটে যাচ্ছে রবি পালের। সব মিলিয়ে যেন, হুগলির রবির আক্ষরিক অর্থেই পোয়াবারো। আর তার হাত ধরেই যেন খুলছে প্যান্ডোরা’জ বক্স।