বাংলা হান্ট ডেস্ক : এ অর্জুনের কৃষ্ণ নেই। তাই কি বারেবারে দিক ভ্রষ্ট হন? ইনি অর্জুন সিং (Arjun Singh)। ব্যারাকপুরের ডাকসাইটে নেতা। তবে কোন দলে তা বোঝা বড় দায়। কখনও এই ফুলে তো কখনও ওই ফুলে। ছিলেন কংগ্রেসের কাউন্সিলর। তারপর তৃণমূলের বিধায়ক (TMC MLA)। বর্তমানে বিজেপির সাংসদ (BJP MP)। তিন রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচনে লক্ষ্যভেদ করেছেন। জল্পনা, এবার নাকি ফের পদ্মফুলে ঘর বাঁধার তোরজোড় করছেন।
কী এমন করলেন অর্জুন? বিশেষ কিছুই করেননি তিনি। শুধু বিজেপির কয়েক জন সাংসদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে প্রাতরাশ সেরেছেন। সেই ছবি আবার তিনি নিজেই শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি সুসজ্জিত খাবার ঘর। সেখানে একটি টেবিলে বসে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং। তাঁর পাশেই বসে রয়েছেন দুই বিজেপি সাংসদ। ওই ছবি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘আজ ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল সাংসদকে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রাতরাশের আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতেই এসেছি।’
এই ছবি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি আবার বিজেপিতে ফিরছেন নাকি অর্জুন? নাহলে খামোখা পদ্ম সাংসদদের সঙ্গ এক টেবিলে বসে প্রাতরাশ সারবেন কেন? অনেকে অবশ্য এই মতের বিরোধিতাও করেন। তাঁদের মতে অর্জুন তৃণমূলে নাম লেখালেও খাতায় কলমে এখনও বিজেপি সাংসদ। তাই রাষ্ট্রপতি ভবনে বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বসেই প্রাতরাশ সেরেছেন তিনি। তবে কারণ যাই হোক, জল্পনা কিন্তু তৈরি হচ্ছে রাজনীতির অলিন্দে।
এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক অর্জুন সিং রাজনৈতিক যাত্রা। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর জীবন শুরু ১৯৯৫ সালে। ওই বছর ভাটপাড়া পুরসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জিতে কাউন্সিলর হন। ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন অর্জুন। ২০০১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ভাটপাড়া আসনে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। সিপিআইএম প্রার্থী রামপ্রসাদ কুন্ডুকে হারিয়ে প্রথমবার বিধানসভায় পা রাখেন তিনি। পরপর চারবার জিতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভাটপাড়ার বিধায়ক ছিলেন। ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন অর্জুন।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাধে অর্জুনের। লোকসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে তিনি ক্ষুব্ধ হন। তারপরই তাঁর দলবদল। ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে ঝাঁপ দেন। পদ্মে গিয়ে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের টিকিটও পান। তৃণমূলের দীনেশ ত্রিবেদীকে হারান। ২১ বছর পর তৃণমূলের সঙ্গ ছেড়ে পদ্মফুলে গিয়েছিলেন। তিন বছর বিজেপিতে সংসার করে ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন অর্জুন।