বাংলাহান্ট ডেস্ক: চলছে রমজান (Ramadan) মাস। চলছে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের রোজা রাখার পালা। এদিকে আজ আবার রামনবমী (Ram Navami)। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। তাই আজকের দিনে গেরুয়া পতাকা কিনছেন বহু মানুষ। পেট তো কোনও ধর্ম মানে না। তাই রোজা রেখেই রোজকার কাজ করে চলেছেন মানুষজন। বহু পেশার সঙ্গে যুক্ত মুসলিমদের মধ্যে রয়েছে কাজের ব্যস্ততা। এরই মধ্যে আজকের দিনে এক সম্প্রীতির নজির দেখা গেল মেদিনীপুরে।
রোজার মাঝেই একের পর এক পতাকা সেলাইয়ের কাজ করে চলেছেন পেশায় দর্জি কাজী আবু বক্কর। বুধবার দুপুর থেকে শুরু হয়েছে কাজ। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ধ্বজা সেলাই করে গিয়েছেন কাজী। বুধবার সন্ধ্যায় শুধু একটুখানি সময় রোজা খোলার সময় পেয়েছিলেন। তারপর থেকে আবার কাজে লেগে পড়েছেন কাজী। রামনবমীর পুজো উপলক্ষে গেরুয়া ধ্বজা লাগানোর রীতি পালন করেন হিন্দুরা।
তাই পুজোর আগের দিন অর্ডারের চাপ বাড়বে জানা কথা। সকাল হলেই যে ডেলিভারি দিতে হবে! তাই বুধবার রাত জেগে কাজ করে গিয়েছেন এই দর্জি। এ দিন আবুর কাছে গিয়ে দেখা গেল সেই ব্যস্ততার ছবি। বাজার থেকে পতাকা কিনে এনে অনেকেই তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন সেলাই করে দেওয়ার জন্য। ছোট বড় মিলিয়ে সমানে তিনি করেছেন সেই ধ্বজা সেলাইয়ের কাজ। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবারও বেশ কয়েকজন তাঁর কাছে এসে ধ্বজা সেলাই করিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।
রোজায় উপোস থাকা সত্ত্বেও কোনও খদ্দেরকেই ফিরিয়ে দেননি কাজী আবু বক্কর। ব্যস্ততার মধ্যেই আবু সাংবাদিকদের বললেন, “রাত দেড়টা পর্যন্ত কাজ করেছি। সকালে ডেলিভারি দিতে হবে। সকলেই পতাকা তুলবেন। তাই তাঁদের ফিরিয়ে দিতে পারিনি। সবারই অনুরোধ তাড়াতাড়ি কাজ করে দেওয়ার। তাই মধ্যরাত অবধি কাজ করলাম।” আবুর বাড়ি অলিগঞ্জে। তবে টেলারিংয়ের দোকান রয়েছে মেদিনীপুরের মিরবাজার এলাকায়। মেদিনীপুরে বিগত কয়েক বছর ধরে বেড়েছে রামনবমীতে ধ্বজা ওড়ানোর চল।
বাজার থেকে কেনা বজরংবলির ছবিওয়ালা পতাকা শক্তপোক্ত করতে অনেকেই সেলাই করিয়ে নেন। রমজান মাসে রোজা রাখছেন আবু। তিনি বলেন, “আমরা সকলেই মিলেমিশে থাকি। ধর্ম যার, উৎসব সবার।” আবুর বিষয়ে মিরবাজার এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “আবু স্থানীয় ক্লাবের সদস্য। সব কিছুতেই যুক্ত থাকেন তিনি। রাত জেগে পতাকা সেলাই করে দিয়েছেন।” উল্লেখ্য, বুধবার মেদিনীপুর শহরে মোটর বাইক মিছিল হয় রাম নবমী সমারোহ কমিটির ব্যানারে। বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি বাইক মিছিলও হয় সেখানে।