বাংলাহান্ট ডেস্ক: সোমবার ফের একবার পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক স্থাপনাকে আক্রমণ করলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)। তাঁর বক্তব্য, তাদের কাছে এখন মাত্র দু’টি বিকল্প রয়েছে – হয় তুরস্ককে অনুসরণ করা নয়তো মায়ানমারের মতো অবস্থায় চলে যাওয়া। ২০২১ সালে অং সান সু চির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমারের সেনাবাহিনী। অন্যদিকে, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নবেমেছিলেন মানুষ।
ইমরান খান আরও বলেন, “আজকে আমরা আমাদের সাংবিধানিক ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছি। যেখানে আমরা তুরস্কের মতো হতে পারি অথবা মায়ানমারে পরিণত হতে পারি। সকলে পিটিআইয়ের মতো সংবিধান, আইনের শাসন ও ব্যবস্থার সঙ্গে দাঁড়াবেন, নাকি দুর্নীতিগ্রস্ত মাফিয়া, জঙ্গলরাজ ও ফ্যাসিবাদের পাশে দাঁড়াবেন, তা বেছে নিতে হবে।”
স্বাধীনতার পর থেকেই পাকিস্তানে দীর্ঘ সময় জুড়ে সামরিক শাসন চলেছে। বারবার ক্ষমতা বদলেছে পাকিস্তানে। আজ পর্যন্ত কোনও প্রধানমন্ত্রীই নিজের মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। এই অবস্থায় দেশটিকে বারবার শাসন করেছে সেনাবাহিনী। সেই শাসনের সময়কালে নিরাপত্তা ও বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে তারা। এদিকে গত বছর এপ্রিলে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে গদিচ্যুত হওয়ার পর থেকেই সামরিক সংস্থার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন ইমরান খান।
চলতি বছরের শেষে পাকিস্তানে রয়েছে সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচন থেকে সামরিক বাহিনীকে দূরত্ব বজায় রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। অর্থনৈতিক ও খাদ্যসঙ্কটের পাশাপাশি একটি সংবিধানিক সঙ্কটেও রয়েছে পাকিস্তান। গত বছর জানুয়ারিতে পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নির্বাচন করানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু পিএমএলএন-এর নেতৃত্বাধীন ফেডারেল জোট সরকার সেই রায় মেনে নিতে অস্বীকার করে। ফলে সেই নির্বাচন আর হয়নি।
ইমরান খানের দাবি, পিএমএল-এন এবং তাদের মিত্ররা এই নির্বাচন চায় না। কারণ তারা জানে যে এখন ভোট হলে তারা হেরে যাবে। তিনি আরও বলেন, নওয়াজ শরিগফ দেশের প্রধান বিচারপতি এবং শীর্ষ আদালতের অন্যান্য বিচারপতিদের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, “তাদের (সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের) ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য আমদানি করা এই সরকারের ফ্যাসিবাদী কৌশলের মুখে আমরা সুপ্রিম কোর্ট ও সংবিধানের পাশে আছি।” প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি করে মঙ্গলবার রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।