স্কুলের বই পড়ে বাবাকে আব্বা, মাকে আম্মা ডাকছে সন্তান! উঠল পাঠ্যবই নিষিদ্ধ করার দাবি

বাংলাহান্ট ডেস্ক: শিশুদের সাধারণত নিষ্পাপ এবং সরল বলা হয়। কারও কারও মতে, তাদের মধ্যেই আসলে বিরাজ করেন স্বয়ং ঈশ্বর। শিশুরা চারদিকে যা দেখে তাই শিখে ফেলে। কারণ তাদের শেখার ক্ষমতা বড়দের থেকে অনেক বেশি। তেমনই এক শিশু বই পড়ে জেনেছিল মা-বাবার অন্য একটি প্রতিশব্দ। সে জানতে পেরেছিল যে মা-বাবার প্রতিশব্দ হিসেবে ‘আম্মি-আব্বুও’ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সে তো সরল মনের। ধর্মের বিভেদ তার মনে জায়গা করে নেয়নি। 

তাই নতুন শব্দ শিখে সেটি বাড়িতেও প্রয়োগ করতে শুরু করে। কিন্তু খুশি হওয়ার পরিবর্তে বেজায় চটে যান তার বাবা-মা। কারণ সে যে হিন্দু বাড়ির সন্তান। হিন্দু ধর্মে মা-বাবার প্রতিশব্দ হিসেবে যে ‘আম্মি-আব্বু’ ব্যবহার করা হয় না। তাই ছেলে ধর্মভ্রষ্ট হবে ভেবে সেই বইটাই বাতিল করে দেওয়ার দাবি তুললেন ওই হিন্দু অভিভাবক। ঘটনাটি ঘটেছে দেরাদুনে (Dehradun)। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের দারস্থ হয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা মণীশ মিত্তল। 

ammi abbu

তাঁর এক অদ্ভুত দাবি। অভিযোগ করেছেন, স্কুলের পাঠ্যবই পড়ে নাকি ‘কুশিক্ষা’ পাচ্ছে তাঁর সন্তান। এমনকী এভাবে সন্তানের ধর্মভ্রষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও ভয়ও পাচ্ছেন তিনি। তাই অবিলম্বে সেই বই বাতিল করে দেওয়ার দাবি তুললেন ওই অভিভাবক। এমন দাবিতে চিন্তিত জেলা প্রশাসনও। প্রশ্ন হল, কী এমন শেখানো হচ্ছে স্কুলের ওই পাঠ্যবইয়ে? যার জন্য এমন গুরুতর অভিযোগ তুললেন মণীশ? তিনি জানিয়েছেন, ওই বই থেকে ‘কুশিক্ষা’ পাচ্ছে তাঁর সন্তান। 

মনীশ আরও জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে তাঁর সাত বছরের সন্তান তাঁকে ‘আব্বু’ বলে সম্বোধন করে। একইসঙ্গে সে তার মাকেও ‘আম্মি’ বলে ডেকেছে। এই ঘটনায় প্রথমে হকচকিয়ে যান ওই দম্পতি। তারপর সন্তানকে প্রশ্ন করেন, সে কোথা থেকে এই প্রতিশব্দগুলি শিখল। তখন সে তাঁদের ইংরেজি পাঠ্যবই এনে দেখায়। তাঁরা দেখেন, সেই বইতেই মা-বাবার এই দুই প্রতিশব্দ লেখা রয়েছে। তাঁর দাবি, উর্দু বইতে এমন প্রতিশব্দ লেখা যেতেই পারে। কিন্তু ইংরেজি বইতে এই লেখা মানা যায় না।

ওই প্রকাশনীর বিরুদ্ধে ‘ভুল সংস্কৃতি’ ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাই সেই বই অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, এমনই দাবি করেছেন মণীশ। তাঁর অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বস দিয়েছেন জেলা শাসকও। ইতিমধ্যেই শিক্ষা দফতরের কাছে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, বিতর্কিত ওই পাঠ্যবইটি সারা দেশের বিভিন্ন স্কুলেই ব্যবহৃত হয়। মণীশের দাবি, এভাবেই নাকি ‘অপসংস্কৃতির’ প্রচার হচ্ছে। তাই দেশের সমস্ত স্কুলে এই পাঠ্যবই নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন তিনি।

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর