বাংলাহান্ট ডেস্ক: আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে প্রকাশ্যে বিজেপি-কে নিশানা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বাংলার মানুষকে ‘ভাতে মারার চেষ্টা করছে বিজেপি’, এমনই অভিযোগ করলেন তিনি। শনিবারের সভা থেকে রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন অভিষেক। তাঁর মতে, ২০২১০-এর বিধানসভা নির্বাচন হারার ফলেই বাংলার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে কেন্দ্র। বাংলার মানুষও ‘ছেড়ে কথা বলবে না’ বলে হুঙ্কার দিলেন তিনি।
রাজ্যের বকেয়া টাকা আটকে রাখা থেকে কথায় কথায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ব্যবহার নিয়ে সরাসরি কটাক্ষ করলেন দিল্লিকে। তাঁদের ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভাবছে কেন্দ্র, এমন অভিযোগ করলেন শাসক দলের এই নেতা। একইসঙ্গে হুঙ্কার দিলেন, তৃণমূল চাইলে দিল্লি স্তব্ধ করে দিতে পারে। হুঁশিয়ারি দিলেন, দিল্লি থেকে বকেয়া টাকা ছিনিয়ে আনা হবে।সামনেই রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে কর্মীদের উজ্জীবিত করতে এবং জনসংযোগ বাড়াতে আলিপুরদুয়ারে সভা করতে গিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। সেখান থেকেই বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। অভিষেক এ দিন বলেন, “সাধারণ মানুষকে ভাতে মারার পরিকল্পনা করতে বিজেপি। মানুষের হকের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। তৃণমূলের কাছে হেরে মানুষের উপর দিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।” একইসঙ্গে হুঙ্কার দেন, “বাংলার মানুষকে ভাতে মারলে ছেড়ে কথা বলব না।”
পাশাপাশি, দিল্লিতে তীব্র আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি এ দিনের সভামঞ্চ থেকে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, আগে তাঁর ধারণা ছিল যে ১৭ লক্ষ পরিবারের টাকা বাকি। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখেছেন যে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ কাজ করেছেন কিন্তু টাকা পাননি। তৃণমূল নেতার অভিযোগ, মানুষের হকের টাকা ইচ্ছে করে আটকে রেখে দিয়েছে বিজেপি। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে ১ কোটি ৩৮ লক্ষ পরিবার ১০০ দিনের কাজে নাম নথিভুক্ত করেছে।
সব মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি ৬২ লক্ষ আবেদনকারী রয়েছেন। পয়লা বৈশাখের পরের দিন অর্থাৎ ১৬ এপ্রিল থেকে এই সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে বলে জানান তিনি। এই মর্মে একটি কর্মসূচিরও ঘোষণা করেছেন শাসক দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। সই সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীকে ১ কোটি চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে কথায় কথায় ইডি-সিবিআইয়ের তদন্ত করা নিয়েও সরব হতে দেখা গিয়েছে এই নেতাকে। এখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে সরকার চলছে বলে কটাক্ষ করেন অভিষেক।
তিনি বলেন, “তৃণমূল চোরদের আগলে রাখে না। দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলে ঢোকান। আপত্তি করব না।” না না করে এ দিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও নিশানা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “যাঁকে খাইয়ে দাইয়ে লালন করে বড় করলাম, সে ধোকা দিল।” তাঁকে ‘কালসাপ’ বলেও কটাক্ষ করেন অভিষেক। তিনি আরও বলেন, “সারা ভারতে এমন নেতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাংলার বিরোধী দলনেতা রাজ্যের মানুষের অধিকারের টাকা বন্ধ করে দিতে বলছেন। আমরা আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।”