বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত দুদিন থেকে সংবাদের শিরোনামে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) জীবন কৃষ্ণ সাহা (Jibon Krishna Saha)। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গত শুক্রবার থেকে বিধায়কের বাড়িতে চলছে চিরুনিতল্লাশি। আর এরই মধ্যে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, আদতে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হলেও অনুব্রত গড় বীরভূমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে জীবনবাবু। আর সম্পত্তির পরিমান দেখে তো রীতিমতো চোখ কপালে তদন্তকারীদের।
কিভাবে এলেন রাজনীতিতে? কম সময়ে এত প্রতিপত্তির পেছনে রহস্যটা কী? স্থানীয় সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন বিধায়ক। ইতিহাস নিয়ে স্নাতক তিনি। সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ এর পর স্নাতকোত্তর পাশ করেন বিশ্বভারতী থেকে। জানা গিয়েছে, বিধায়কের তিনকূলে কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। জীবণের বাবার বরাবরই প্রচুর সম্পত্তি ছিল, বহু জমি, একাধিক বাড়ি সহ তেলকলও ছিল তাদের।
স্থানীয় সূত্রেই খবর, শুধু বাবা নয় বিধায়কের মায়ের নামেও ছিল প্রচুর সম্পত্তি। প্রায় তিন বিঘা জমির উপর বাড়ি ছিল তার মায়ের। পাশাপাশি ছিল লরির ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা। ছোটবেলাতে সোনার চামচ মুখে নিয়েই জন্মেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। পড়াশোনা শেষ করার পর পরবর্তীতে একটি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পান তিনি। তবে দুর্নীতির দরুন সেটিও বেশি দিন টেকেনি। বর্তমানেও বিধায়কের পাশাপাশি একটি স্কুলের শিক্ষক তিনি।
মনে করা হয়, বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই তার দুর্নীতির হাত লম্বা হতে থাকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কার্যত প্রতিদিন চাকরির জন্য টাকা নিয়ে বিধায়কের বাড়িতে লাইন দিত বহু মানুষ। ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ৪-৫ বছরে বিপুল পরিমান সম্পত্তি কিনেছেন বিধায়ক। কান্দিতে রয়েছে একটি রাইস মিল সহ ৪ বিঘে জমি। কান্দি হাই স্কুলের পিছনে একটি পুকুর ও গ্যাসের গোডাউনের মালিক তিনি। মুর্শিদাবাদে কমবেশি করে ৩৫ বিঘা জমি রয়েছে বিধায়কের। যেগুলির টাকা দেওয়া হলেও রেজিস্ট্রি হয়নি।
কেবল নিজের জেলায় নয়, অনুব্রত গড় বীরভূমেও বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে তার। সাইথিয়া পুরসভা এলাকায় ৫ কাঠা, শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের আয়ত্তে ৪ কাটা, লাউতোর এলাকায় ২৪ কাঠা জমির মালিক বিধায়কে। সাঁইথিয়া এলাকায় জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে একটি ব্যাংক চলে, রয়েছে একটি রাইস মিল। এছাড়া সেই এলাকায় মত ৪ টি বাড়ি জীবনকৃষ্ণের। তবে তদন্তে এই সম্পত্তির পরিমান আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।