বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর জুলাই মাসে বঙ্গের নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। অন্যদিকে, গত বছরই গরু পাচার মামলায় সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমানে এই দুজনাই জেলবন্দি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতারির পর থেকে এই দুই নেতার নামেই মিলেছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। তবে এত মিল থাকলেও অমিল শুধুমাত্র একটি জায়গায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের বিয়োগ হয়। মেয়েও থাকেন বাইরে। প্রয়াত স্ত্রীর নামে একখানা স্কুল গড়েছিলেন পার্থ। যার বোর্ড অফ ডিরেক্টর্স এ ছিলেন তার মেয়ের জামাই। পরিবারের নামে বলতে কেবল এত টুকুই। ইডি সূত্রে খবর, দীর্ঘ প্রায় এক বছরের তদন্তে যা উঠে এসেছে তাতে দেখা যায়, প্রয়াত স্ত্রীর নামে স্কুল ছাড়া পার্থবাবু সমস্ত সম্পত্তিই করেছেন ‘সখি’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) নামে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তিনিও বর্তমানে জেলবন্দি।
তবে গরু পাচারের তদন্তে এখনও যা খবর উঠে এসেছে তাতে ইডির চার্জশিটে দাবি এখনও পর্যন্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা নগদ অর্থ এবং নামে-বেনামের সমস্ত সম্পত্তি মিলিয়ে কেবল কেষ্টর নামেই ৭৭ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। যার সবটাই গরু পাচারের টাকায় বলে দাবি ইডির। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই বিপুল পরিমান অর্থের মধ্যে পাঁচ কোটি টাকার সম্পত্তি অন্যদের নামে। বাকি সবটাই হয় অনুব্রত, নয় তার প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডল, কিংবা মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে।
গরু পাচার মামলায় কোর্টে পেশ করা চার্জশিটে ইডি-র দাবি, একে একে ভোলে বোম চালকল, কালীমাতা ট্রেডার্স, শিব শম্ভু চালকল, মা দুর্গা ট্রেডার্সের মতো সংস্থার পাশাপাশি বেনামে বহু সম্পত্তি করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে এই সবেরই মালিকানা পরিবারের লোকেদের নামেই।
তবে পার্থর ক্ষেত্রে ঘটনা একেবারে বিপরীত। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বান্ধবী অর্পিতার নামে কসবার ইচ্ছে বাড়ি, বড় অঙ্কের এলআইসির একাধিক পলিসি , নেইল আর্টসের পার্লার সবটাই। গোয়েন্দাদের দাবি, এই সব কিছুই হয়েছিল পার্থবাবুর কালো টাকার দৌলতে। অন্যদিকে, গত বছর তল্লাশির সময় অর্পিতার টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে মিলেছিল কোটি কোটি টাকার পাশাপাশি কেজি কেজি সোনা-গয়না।
এই সব দেখেই অনেকে আবার বলছেন পার্থ আর অনুব্রতর চিন্তা-ভাবনায় বিস্তর ফারাক। অনুব্রত ‘ফ্যামিলি ম্যান’, যা সম্পত্তি সব নিজের আর পরিবারের। সেখানেই হয়তো এখন বাবার সাথে সাথে মেয়েও জেলের চার দেয়ালের অন্দরে।