আর নয় CID! দাড়িভিটের দুই ছাত্রের হত্যাকাণ্ড মামলার তদন্ত ভার পেল NIA! কড়া নির্দেশ আদালতের

বাংলা হান্ট ডেস্ক : দাড়িভিটে দুই ছাত্রর হত্যাকাণ্ড (Darivit Students Murder Case) মামলায় নতুন মোড়। তদন্তের ভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে (National Investigation Agency) দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। আশংকাই সত্যি হল। সিআইডির (Crime Investigation Department) কাজে একেবারেই খুশি ছিল না আদালত। তাই রাজ্যের গোয়েন্দা দফতরের হাতে এই তদন্তের ভার আর নাও থাকতে পারে বলে মনে করেছিলেন অনেকেই এবার সেটাই সত্যি হল। অবশেষে তদন্তের দায়িত্ব পেল এনআইএ (NIA)।

কালিয়াগঞ্জ নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে এই মুহূর্তে তোলপাড় চলছে। তারই মধ্যে উত্তর দিনাজপুরেরই দাড়িভিটে প্রায় পাঁচ বছর আগে, ২০১৮-র ২০ সেপ্টেম্বর, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গোলমালে দুই তরুণের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের হালে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট। দুই তরুণের মৃত্যু ঠিক কাদের গুলিতে এবং কী ধরনের অস্ত্রে–এত দিনেও সিআইডি সে ব্যাপারে আলোকপাত না-করতে পারায় বিচারপতির মন্তব্য, ‘অনেক হয়েছে। আর না। এতদিন ধরে দু’জনের দেহ কবরে রয়েছে। আর না।’

nia 2

বিচারপতির বক্তব্য, পাঁচশোর বেশি উন্মত্ত জনতার ভিড় থেকে বোমা ছোড়া হয়েছে, ভোজালি, বাঁশ, লাঠি, বোতল, রড নিয়ে পুলিসকে আক্রমণ করা হয়েছে–অথচ পুলিস আকাশের দিকে গুলি ছুড়েও জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করল না! কেন শুধুমাত্র লাঠিচার্জ বা কাঁদানে গ্যাসে ভরসা রাখল? আদালতের আরও প্রশ্ন, স্থানীয় বিধায়ক এবং পুলিস সুপার সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠার পরেও কেন সেই ব্যাপারে তদন্তে এগোল না সিআইডি!

এত বড় একটা সশস্ত্র জমায়েত হল, তার মানে আগে থেকে ষড়যন্ত্র ছিল। সেই ষড়যন্ত্র বা রহস্য উদ্‌ঘাটনে সিআইডি কী পদক্ষেপ করেছে এতদিন? সিআইডি তদন্তভার হাতে নেওয়ার পরে কেন জেলা পুলিসের প্রথম তদন্তকারী অফিসরারের সাক্ষ্যগ্রহণও করেনি–সে প্রশ্নও তুলেছে আদালত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী সুবীর সান্যাল কমিশনের তদন্ত-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, নিহতের বাবার চিঠি পেয়ে কমিশনের দল এক ডিআইজির নেতৃত্বে ১১ অক্টোবর ইসলামপুরে যায়।

বার বার রাজ্যকে অনুরোধের পরেও কোনও নথি মেলেনি। প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে দলটি নিজেরাই তদন্ত শুরু করে। কমিশনের তদন্ত অনুযায়ী, উপর দিক থেকে চালানো গুলিতে তাপস বর্মনের মৃত্যু হয়েছিল। রাজেশ সরকারকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল। সে কারণে গুলি শরীরের ভিতরে গিয়ে ঘুরে দেহাংশ ছিন্নভিন্ন করেছে।

রাইফেল থেকে ছুড়লে এমন হতে পারে বলেও মনে করেছেন কমিশনের তদন্তাকারীরা। আবার পুলিসকর্মী পরিমল অধিকারী গুলিতে জখম বলে পুলিশ দাবি করলেও তদন্তকারীরা জেনেছেন, তিনি গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন। গুলি লাগেনি। কমিশনের বক্তব্য, দু’হাজার পড়ুয়ার ওই স্কুলে বহু শিক্ষক পদ ফাঁকা ছিল। শুধু উর্দু শিক্ষক নিয়োগ কেন, এই নিয়েই প্রতিবাদ। গোলমাল বাড়ে পুলিসের দুর্বলতায়। দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধে। এরপরই ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর