যার অ্যাকাউন্টে কেষ্টর রাখা লক্ষ লক্ষ টাকা, সেই শ্যামাপদর বাড়ির দশা দেখে চোখে জল আসার জোগাড়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। বর্তমানে তিহাড় বন্দি তিনি। গ্রেফতারির পর একের পর এক ঝোলা থেকে বেরোচ্ছে বেড়াল। ইডির (ED) দাবি, গরু পাচারের কোটি কোটি কালো টাকা পৌঁছেছে অনুব্রতর কাছে। মেয়ে সুকন্যার অ্যাকাউন্টেও টাকার পাহাড়। তবে সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ যে বিষয়টি তা হল কেষ্টর বাড়ির পরিচারক থেকে, সবজি বিক্রেতা সবার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই লেনদেন হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার।

কেষ্ট মামলায় নাম জুড়েছে এমন কিছু সাধারণ মানুষের নাম যা দেখে রীতিমতো চোখ কপালে ইডির। এর আগেই এই মামলায় নাম এসেছিল কেষ্টর বাড়ির পরিচারক বিজয় রজকের। দাপুটে নেতা অনুব্রতর গা-হাত-পা টিপে দিতেন তিনি। মানলাম অনুব্রত হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা, তবে তার বাড়ির পরিচারকের অ্যাকাউন্ট থেকে হাজার নয়, মিলেছিল কোটি কোটি টাকা লেনদেনের খবর।

কোটি টাকার মালিক যিনি সেই বিজয় রজকের বাড়ি-ঘরের হাল অবশ্য অত্যন্তই সাধারণ। সেই বিজয়বাবুর প্রসঙ্গ সরতে না সরতেই এবার গল্পে আগমন নতুন চরিত্রের। কে তিনি? তিনি শ্যামাপদ কর্মকার। কী তার পরিচয়? শ্যামাপদ বোলপুর পৌরসভায় একজন স্থায়ী টিকা কর্মী, বোলপুরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। যার মাসিক বেতন সাড়ে ৯ হাজার টাকা।

সংসার টানতে তিনি বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ের দেওয়াল লিখনের কাজ করেন। পাশাপাশি মেডিকেল কর্মী হিসেবেও কাজ করেন। চরম আর্থিক সংকটে ছলে যার সংসার সেই ব্যক্তির নামে থাকা অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। যেই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল ২০১৩ সালে। গরু পাচারের তদন্তে নেমে এমনই কাণ্ড দেখে মাথায় হাত তদন্তকারীদের।

anubrataxx

তবে এই বিপুল পরিমান টাকার বিষয়ে শ্যামাপদ কর্মকার কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে তিনি বলেন, তদন্তকারী আধিকারিকদের যা বলার বলে এসেছেন। তদন্তে সমস্ত রকম সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন শ্যামাপদ। ওই একটি অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ওই ব্যক্তির নামে আরও একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যেসব অনুব্রত ও সায়গাল হোসেনের নির্দেশে খোলা হয়েছিল বলে দাবি ইডির।

তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় যার নামে থাকা অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন তার বাড়ির অবস্থা দেখলে চোখে জল আসতে বাধ্য। মাথার ওপর ত্রিপলের ছাদ, ছোট্ট মতো একটি এক কামরার ঘর। সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন ঠিকই তবে তাও নাকি মেলেনি। এই হতদরিদ্র মানুষ গুলোর অসহায় অবস্থাকে কাজে লাগিয়েই গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করা হত বলে আশঙ্কা তদন্তকারীদের।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর