বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ মোহনবাগান (Mohun Bagan) সমর্থকরা এই মুহূর্তে অত্যন্ত আনন্দিত। তাদের প্রিয় দল আইএসএল জিতেছে। এএফসি কাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই গত ফুটবল বিশ্বকাপ জেতা আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজ এই ক্লাবে পা রাখছেন। সেইসঙ্গে এবার আইপিএলেও খুব শীঘ্রই সবুজ মেরুণ জার্সি পরিহিত একটি দলকে এক ম্যাচের জন্য দেখতে পাবেন তারা।
এরমধ্যেই মোহনবাগান সমর্থকদের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে গেল ক্লাবের তরফ থেকে একটি ঘোষণার পর। ‘এটিকে মোহনবাগান ফুটবল ক্লাব’ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে আগামী ১ লা জুন ‘এটিকে মোহনবাগান’ থেকে পরিবর্তিত হয়ে ‘মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস’ করে দেওয়া হবে। সমর্থকরা এবার অধীর আগ্রহে দিন গুনছেন।
তবে পড়শী ক্লাবের এই সুদিনে চূড়ান্ত খারাপ অবস্থা ইস্টবেঙ্গল ভক্তদের। তাদের প্রিয় ইস্টবেঙ্গল মহিলা দল ‘জাতীয় মহিলা লিগ’-এত কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ ‘সেতু এফসি’-র কাছে ৯-০ ফলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে। অনেক বাঁধা, বিপত্তি, প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করে এগোচ্ছিল সুজাতা করের এই দল। তাদের এই শেষ পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। এরই মধ্যে সমর্থকদের সামনে এক অভিনব আবদার তুলে ধরেছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা।
ক্লাবের তরফ থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আপনারা সবাই জানেন, অভিমারী কালে আমাদেরকে বিভিন্ন দিক থেকে সমস্যায় পরতে হয়েছে। তার মধ্যে দিয়েও আমরা আমাদের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি পাশাপাশি আই.এস.এল.এ ও অংশগ্রহণ করেছি। বিগত বেশ কিছু দিন ধরে দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পৃথিবী তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সভ্য-সমর্থকরা লিখছেন, বেশ কিছু শুভানুধ্যায়ী সভ্য সমর্থকেরা ক্লাবে এসে বলছেন এমনকি গত পরশু দিন ও একদল সভ্য সমর্থক ক্লাবে এসে একই কথা জানিয়েছেন, কিংবা দূরভাষের মাধ্যমে আমাদের পরামর্শ ও দিচ্ছেন, বিদেশের ক্লাবগুলোর মতো কেন আমাদের ক্লাবেও ‘ক্রাউডফান্ডিং করা হচ্ছে না। তাদের বক্তব্য ক্লাব তো তার পরিকাঠামো, স্পোর্টস ও ইয়ুব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে একটা ফান্ড তৈরী করতেই পারে। এই কিছুদিন পূর্বে আমরা যখন উত্তরবঙ্গে গিয়েছিলাম ক্লাবের নামে রাস্তা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তখনও আমাদের কাছে এক ঝাঁক সমর্থক এই একই অনুরোধ করে। সবার অনুরোধ-পরামর্শকে মাথায় রেখে কর্মসমিতির সভায় সর্বসম্মত ভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, যারা অর্থ দিতে ইচ্ছুক তারা যেন আমাদের এই নিম্নে লিখিত ব্যাংক আকাউন্টে, যার যা সামর্থ সেটি দিয়ে আগামী দিনে ক্লাবের পরিকাঠামো, স্পোর্টস ও ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টের জন্য একটি ফান্ড। তৈরী করি। এর মধ্যে যখন যে ক্ষেত্রে প্রয়োজন ভিত্তিক অর্থ ব্যয় করা হবে। যে বা যারা এই অর্থ দান করছেন, ক্লাবের তরফ থেকে তাদেরকে শংসাপত্র প্রদান করা হবে। সকল ইস্টবেঙ্গল প্রেমীদের কাছে আমাদের এই আবেদন রইলো ‘ক্রাউডফান্ডিং’ এর ক্ষেত্রে তারা সর্বতো ভাবে এগিয়ে আসুনা বিভিন্ন সময়ে এই বিষয়ে তাদের ইচ্ছা আমরা দেখে এসেছি বলে, আমরা উৎসাহিত হয়েছি এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।”
কিন্তু এখন সমস্যা হল একটা বড় অংশের সমর্থকদের সঙ্গে ক্লাব কর্তাদের সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে তাদের ওপর আর ভরসা করতে পারছেন না সেই সমর্থকরা। ক্রাউড ফান্ডিং নতুন কিছু নয় এবং বিদেশের বহু ক্লাবে এমনটা হয়েই থাকে। কিন্তু সমর্থকদের রক্ত জল করে খেটে উপার্জন করা পয়সা সঠিকভাবে ইস্টবেঙ্গলের কাজে লাগবে কিনা, সেই নিয়ে নিশ্চিন্ত নন অনেকেই। আবার ব্যতিক্রমী সমর্থক যে নেই এমনটা নয়। বহু সমর্থক আছেন যারা ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যেই প্রভূত অর্থ পাঠিয়ে দিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে তারা অত্যন্ত আবেগী। ক্লাব কর্তারা শেষপর্যন্ত যে ভালোই অর্থ পাবেন সেই ব্যাপারে তারা নিশ্চিন্ত। এখন শুধু তাদের দায়িত্ব হল সমর্থকদের সেই ভরসার মান রাখা।