বাংলা হান্ট ডেস্ক: একজন ভুল করছে আর তার শাস্তি অন্য কেউ পাচ্ছে। আসলে ঠিক এমন ঘটনাই পরিলক্ষিত হয়েছে আফ্রিকার (Africa) দেশ সুদানে (Sudan)। গৃহযুদ্ধে আক্রান্ত এই দেশে প্রায় ৬০ টি নিষ্পাপ শিশু মারা গেছে। এমনকি, তাদের মধ্যে বেশকিছু নবজাতকও ছিল। ওই শিশুগুলি একটি সরকারি অনাথ আশ্রমে ছিল। এই প্রসঙ্গে দ্য গার্ডিয়ান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বিগত এক মাসের মধ্যেই প্রাণ হারিয়েছে ওই শিশুগুলি। শুধু তাই নয়, গত সপ্তাহের শেষ তিন দিনে ২৬ টি শিশু মারা যায়।
এদিকে, সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (AP) ইতিমধ্যেই সুদানের রাজধানী খার্তুমে স্থিত আল-মায়কোমা অনাথ আশ্রমে বেশকিছু চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবক, স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং অন্যান্য কর্মীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। যেখান থেকে জানা গিয়েছে, সেখানকার শিশুদের অবস্থা এখন খুবই খারাপ জায়গায় রয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে খাদ্যের অভাব, অপুষ্টি, ডিহাইড্রেশন এবং জ্বর ও সংক্রমণের কারণে ওই শিশুগুলির মৃত্যু হয়েছে। মূলত, সঠিক ওষুধ না পাওয়ার কারণে এবং যত্নের অভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।
শোচনীয় অবস্থা অনাথ আশ্রমগুলির: এমতাবস্থায়, সুদানে AP-র সাংবাদিকরা অনাথ আশ্রম সহ হাসপাতাল এবং সেখানকার শিশুদের এই শোচনীয় অবস্থার বেশকিছু ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করেছেন। যেখানে কর্মচারীদের শিশুদের মৃতদেহ বহন করতে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ফটো এবং ভিডিওতে বহু শিশুকে ঘরের মেঝেতে বসে কাঁদতেও দেখা গিয়েছে।
এদিকে, সমগ্ৰ অনাথ আশ্রমে কেবলমাত্র একজন চিকিৎসকের সন্ধান মেলে। তিনি জানান যে, নবজাতকদের প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর খাওয়ানো দরকার। কিন্তু, সেখানে কর্মী সঙ্কটের জেরে তাদের দেখভাল করার কেউ নেই। চিকিৎসকের মতে, অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে প্রতিদিন দুই থেকে চারজন কিংবা তারও বেশি শিশু মারা যাচ্ছে। তাঁর মতে, গত ২৬ মে অন্তত ১৩ টি শিশু মারা গেছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এপ্রিলের শুরুতে সুদানে সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। কিছুদিন পর উভয়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলেও তা লঙ্ঘন করা হয়। মূলত, যুদ্ধবিরতির পর রাজধানী খার্তুমে প্রতিদিনই রকেট হামলা হচ্ছে। দেশে চলমান যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। পাশাপাশি, ১৩ লক্ষেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে।