বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের প্রত্যেকের মনেই এই প্রশ্নটা কখনও না কখনও এসেছে যে এই প্রকান্ড বিশ্বের শেষ প্রান্তটি ঠিক কোথায়? পাশাপাশি, সেখানে যাওয়ার ক্ষেত্রে আদৌ কি কোনো রাস্তা (E-69 Highway) রয়েছে? বিভিন্ন সময়ে এহেন প্রশ্ন আমাদের মনে ভিড় করে এলেও প্রশ্নগুলির সঠিক উত্তর কিন্তু আমরা জানতে পারি না। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবো।
এই প্রসঙ্গে প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, ইউরোপের দেশ নরওয়েতে এমন একটি রাস্তা রয়েছে, যা বিশ্বের “লাস্ট রোড” বা শেষ রাস্তা হিসেবে পরিচিত। বলা হয় যে, এই রাস্তা শেষ হলেই দেখা যায় শুধু সমুদ্র আর হিমবাহ। এগুলি ছাড়া ওই রাস্তার সামনে আর বেশি কিছু দেখা যায়না। এই রাস্তাটি E-69 হাইওয়ে নামে পরিচিত। পাশাপাশি, এই রাস্তা সম্পর্কে বেশকিছু চমকপ্রদ তথ্যও সামনে এসেছে।
রাস্তাটি নরওয়েকে সংযুক্ত করে: উল্লেখ্য যে, উত্তর মেরু হল পৃথিবীর সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু। যেখান থেকে পৃথিবীর অক্ষ ঘোরে। এদিকে, নরওয়ে দেশটিও এখানেই রয়েছে। E-69 হাইওয়ে নরওয়েকে পৃথিবীর শেষ প্রান্তে সংযুক্ত করেছে। মূলত, এই রাস্তাটি এমন একটা জায়গায় গিয়ে শেষ হয়েছে যেখান থেকে সামনের রাস্তা আর দেখা যায়না। কারণ, এর পর সর্বত্র আপনি শুধু বরফ দেখতে পাবেন। এই রাস্তার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ কিলোমিটার।
যেতে পারবেন না একা একা: এমতাবস্থায়, আপনি যদি E-69 হাইওয়েতে একা যাওয়ার কথা ভাবেন এবং বিশ্বের শেষ প্রান্তটি একদম কাছে থেকে দেখতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে একটি গ্রূপ প্রস্তুত করতে হবে। তবেই আপনাকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। মূলত, এই রাস্তায় কোনো ব্যক্তি একা যেতে পারবেন না। যানবাহনও এখানে চলাচল করতে পারেনা। কারণ, এই রাস্তায় বহু কিলোমিটার পর্যন্ত সর্বত্র বরফের মোটা চাদরের আস্তরণ রয়েছে। যার কারণে এখানে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ছ’মাস মাস ধরে থাকে অন্ধকার: সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, উত্তর মেরুর কারণে শীতকালে সেখানে ছ’মাস অন্ধকার থাকে। আবার গ্রীষ্মকালে সূর্য একটানা দেখা যায়। শীতকালে এখানে কোনো দিন থাকে না এবং গ্রীষ্মকালে থাকে না কোনো রাত। আশ্চর্যের বিষয় হল, এত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্বেও সেখানে বহু মানুষ বসবাস করেন। সেখানকার তাপমাত্রা শীতকালে মাইনাস ৪৩ ডিগ্রি এবং গ্রীষ্মকালে শূন্য ডিগ্রিতে পৌঁছে যায়।
আগে এখানে মাছের ব্যবসা হত: কথিত আছে, আগে এই এলাকায় মাছের ব্যবসা চলত। কিন্তু ১৯৩০ সালের পর এখানে উন্নয়ন শুরু হয়। ১৯৩৪ সালের আশেপাশে পর্যটকরা এখানে আসতে শুরু করেন। এখন ওই জায়গায় একাধিক হোটেল এবং রেস্টুরেন্টের খোঁজ পাওয়া যায়।