বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভোট হতে এখনও প্রায় একমাস। তার আগেই মনোনয়ন-পর্ব ঘিরে টানা অশান্তি চলছেই। মঙ্গলবার মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড়। চারিদিকে গুলির শব্দ, চলল দেদার বোমাবাজি। আইএসএফ-এর (ISF) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়।
অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা করতে গেলে আইএসএফ-কে বাধা দেয় তৃণমূল (Trinamool Congress) কর্মীরা। কোথায় ১৪৪ ধারা! সবকিছু উপেক্ষা করে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসের সামনে আইএসএফ এবং তৃণমূলের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। সংঘর্ষ রুখতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস।
তবে পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি এবং বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে। জখম হন কয়েক জন পুলিশকর্মী।প্রথমদিকে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পুলিশ কিছুটা পিছলেও পরে আস্তে আস্তে পুলিশ গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে, তৃণমূলের নবজোয়ার যাত্রা নিয়ে আজই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যাবেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
ভাঙড় ১ নম্বর ব্লক থেকেই সেই নবজোয়ার সূচনার কথা। তবে তার আগেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গোটা এলাকা। আইএসএফের অভিযোগ, সোমবার ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে যাচ্ছিলেন আইএসএফ কর্মীরা। সেখানেই তাদের আটকান তৃণমূল কর্মীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই নিয়েই সেখানের বিজয়গঞ্জ বাজারে আইএসএফ এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
আইএসএফ প্রার্থীদের মনোনয়ন বানচাল করতে গুলি চালানো হয় বলেও অভিযোগ। গোটা ঘটনায় আহত এক আইএসএফ নেতা। সটান বিডিও অফিসের কাছে শতাধিক বোমা (Bombing) ফেলা হয় বলেও দাবি। ঘটনাস্থলেই তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের (Arabul Islam) ছেলের গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বোমা। আরাবুলের ছেলে হাকিমুলের (Hakimul Islam) গাড়ির ড্যাশবোর্ড থেকে উদ্ধার হয় বোমা।
আইএসএফ কর্মীদের অভিযোগ, তিনটি গাড়িতে রাখা ছিল বোমা। যার মধ্যে একটি আরাবুল ইসলামেরও। নিজের গাড়ি থেকে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় হাকিমুল ইসলাম বলেন, চক্রান্ত করা হয়েছে। তিনি নিজে এই গাড়ি ব্যবহার করছিলেন না। ভাঙড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে, অশান্তির সৃষ্টি করছে আইএসএফ। বহু গাড়ি ভাঙা হয়। সেই সময় তার গাড়ি ভাঙচুর করে বাইরে থেকে কেউ বা কারা তার গাড়ির ভিতর বোমা ঢুকিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ আরাবুল পুত্রের। ভোট পূর্বে তাকে ফাঁসাতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন হাকিমুল।
অন্যদিকে, এই বিষয়ে ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি জানিয়েছেন,”অশান্তির ঘটনায় বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। একজন প্রার্থীকে গুলি করা হয়। তাদের মনোনয়ন আটকাতেই তৃণমূল কংগ্রেসের গুণ্ডারা এই কাজ করেছেন।” তৃণমূলের দাবি আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রা ব্যাহত করতেই ইচ্ছা করে এই অশান্তি করেছে আইএসএফ। পাল্টা নওশাদ বলেন, ” নবজোয়ার কর্মসূচীতে বাধা দেওয়ার থাকলে আমরা আজ ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকে মনোনয়ন দিতে যেতাম।”