বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল রাজ্য। বঙ্গ জুড়ে চৰ্চা, সংবাদের শিরোনামে সেই নিয়োগে ‘দুর্নীতি’! আর এবার এই নিয়ে খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও রাজ্য সরকার। প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে সম্প্রতি হদিস মিলেছে পুর নিয়োগ দুর্নীতির (Municipality Recruitment Scam)। এবার এই ইস্যুতেই নাম না করে মমতা সরকারকে আক্রমণ মোদীর।
মঙ্গলবার রোজগার মেলায় হঠাৎই মোদীর মুখে উঠে আসে বঙ্গে পুরসভায় গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি-পদে চাকরিতে দুর্নীতির প্রসঙ্গ। কড়া ভাষায় আক্রমণ করে মোদী বলেন, ‘রেস্তোরাঁর মতোই চাকরির জন্যও কি রেট কার্ড হতে পারে? পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি চাকরির নামে যুব সম্প্রদায়কে লুঠ করছে। যুব সম্প্রদায়ের স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে চাকরির রেট কার্ড। দেশের মানুষই ঠিক করবে কি চান, রেট কার্ড না, সেফ গার্ড।’
পশ্চিমবঙ্গের উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এক রাজ্যের ক্যাশ ফর জব এখন চর্চার শিরোনামে। যুব সম্প্রদায়ের কাছে যা গভীর চিন্তার বিষয়। সরকারি চাকরি করতে গেলেই টাকা দিতে হয়! ড্রাইভার থেকে শুরু করে নার্স এই সমস্ত পদও বিক্রি হয়েছে টাকার বিনিময়ে। গরিবদের লুঠ করা হয়েছে। এত লুঠ, কাটমানির কারবার চললে দেশের মানুষ কোথায় যাবে?’
প্রসঙ্গত, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে কেউটে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে পুরসভায় নিয়োগেও দুর্নীতির খোঁজ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। ইডির হারে আই পুরসভায় চাকরি বিক্রির ‘রেট কার্ড’। যা দেখে মাথায় হাত তদন্তকারীদের। দেখা যায় চাকরি বিক্রির জন্য তৈরী হয় রেট চার্ট। সেই তালিকার দাম ধরেই চলত চাকরি বিক্রি।
এই যেমন, ‘পুরসভায় শ্রমিকের চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা!’ । ‘পুরসভায় গাড়ির চালকের চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা!’।’ সাফাইকর্মীর চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা!’। ‘পুরসভার গ্রুপ ডি-র চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা!’। ‘পুরসভার গ্রুপ সি-র চাকরির দাম ন্যূনতম ৭ লক্ষ টাকা!’। ‘পুরসভার টাইপিস্টের চাকরির ন্যূনতম দাম ৭ লক্ষ টাকা’।
উল্লেখ্য, পুর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে চলছে মামলাও। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই আক্রমণের পরই শুরু রাজনৈতিক তরজা। রাজ্যে কোনো ক্ষেত্রেই এমন কোনও রেট কার্ড নেই বলেই পাল্টা মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।