বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেষ্টহীন পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Vote)! ২০১৮ সালে যখন শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল তখন কেষ্ট গড় বীরভূমে (Birbhum) রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল ‘উন্নয়ন’। সেবছর মনোনয়ন পর্বেই জুবুথুবু দশা হয়েছিল বিরোধীদের। আর ভোটের ফলাফল সকলেরই জানা। বীরভূমের ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৬৬টিতেই জয়লাভ করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। বিজেপির (BJP) ঝুলিতে গিয়েছিল একটি মাত্র আসন। যেটিও পরে চলে যায় তৃণমূলে। অনেকেই বলেন সেবছর জেলায় ভোট করিয়েছিলেন ‘বীরভূমের বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডল।
এবার অনুব্রত (Anubrata Mondal) নেই। বর্তমানে গরু পাচার মামলার অভিযোগে জেলবন্দি তিনি। বীরভূম তো দূর, বর্তমানে তার ঠিকানা হয়েছে বাংলা ছাড়িয়ে দিল্লির তিহাড়। তাহলে এবার কেমন হল বীরভূমের মনোনয়ন পর্ব! গতবার মনোনয়ন জমা না দিতে পারার বহু অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। এবার সেই প্রসঙ্গে কী বক্তব্য তাদের?
তাহলে উল্লেখ করি, যে এবারে ভোটের আগেই তৃণমূলের জয়ের খাতায় বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের নাম উঠেছে। সূত্রের খবর, বীরভূমের ১৬৭টি গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যে ৩২টি পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে নিতে চলেছে তৃণমূল। ওই পঞ্চায়েত গুলিতে বিরোধীদের মনোনয়নই জমা পড়েনি। তাই ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই পঞ্চায়েতগুলি যেতে চলেছে শাসকদলের ঝুলিতে।
যে তালিকায় রয়েছে সিউড়ি ২ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েত। পাশাপাশি নানুর ব্লকের ৮টি, লাভপুরের ৯টি, বোলপুরের ৫টি, ইলামবাজারের ২টি পঞ্চায়েত। গত বছর মনোনয়ন জমা করা নিয়ে অনুব্রতর বিরুদ্ধে বিরোধীদের ঢালাও অভিযোগ ছিল। তবে এবার কেষ্ট না থাকা সত্ত্বেও মনোনয়ন পর্বেই রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি।
বীরভূম জেলায় ৪৬ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতেই ব্যর্থ বিজেপি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, বীরভূমে ২৮৫৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ১৫৬৩টিতে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা পড়েছে। অন্যদিকে পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রেও একই দশা। ৪৯০টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যেও প্রায় ২১ শতাংশ আসনে মনোনয়ন জমা করতে পারেনি পদ্ম শিবির।
২০১৮ সালে বীরভূম জেলা পরিষদে আসন সংখ্যা ছিল ৪২। বর্তমানে ১০ বেড়ে তা বেড়ে হয়েছে ৫২। শাসকদলের ৫৯ জন, বামেদের ৫১ জন, কংগ্রেসের ১৬ জন ও গেরুয়া শিবিরের ৫৯ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতিr ৫১৯ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল সবেতেই ভরে ভরে প্রার্থী দিয়েছে। সিপিআইএমের ৩৩২, কংগ্রেসের ৯৯ এবং বিজেপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন জমা পড়েছে ৩৮৪ টি।
গ্রামপঞ্চায়েতেও প্রথম স্থানে তৃণমূল। ২৮৫৯ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস মনোনয়নপত্র দিয়েছে ২৯১৬টি, বিজেপি ১৫৬৩টি, সিপিআইএম ১৫১৯টি এবং কংগ্রেস ৫৩৩টি। যদিও বিরোধীদের দাবি, এর পেছনেও রয়েছে শাসকদলের হাত। মনোনয়ন দাখিল থেকে শুরু করে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রার্থীদের। তাই ভয়ে গ্রামের মানুষগুলো হুমকির মুখে পড়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। যদিও তৃণমূল বিরোধীদের দাবি মানতে নারাজ। তাদের দাবি, বিরোধীরা সারা বছর সংগঠন করে না। সে কারণেই প্রার্থী দিতে অক্ষম।