বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কিছুদিন আগেই তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে ঠাকুরনগরের মতুয়াধামে পৌঁছয় তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তবে সেখানে ঢুকতেই পারেননি নেতা। অভিযোগ ওঠে কয়েকশো পুলিশ ফোর্স নিয়ে মতুয়াধামের কাছে মিছিল করতে চেয়েছিলেন সাংসদ অভিষেক। কিন্তু মতুয়া সম্প্রদায় তাতে বাধা প্রদান করায় মতুয়া অনুগামীদের মারধর করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এমনটাই অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে। এরপর তৃণমূল-বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।
তবে এই ঘটনা নিয়ে একাধিক অভিযোগ জানানো হলেও, প্রশাসনের তরফে কোনও রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে দাবি বিজেপির শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur)। উল্টে নিগৃহীতদের বিরুদ্ধেই ৫টি এফআইআর দায়ের করা হয়। তাদের দলের কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতারও করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এবার এই নিয়ে সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ শান্তনু ঠাকুর।
কী ঘটেছিল সেদিন? গত রবিবার নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে ঠাকুরনগরে মতুয়াধামে পুজো দিতে আসার কথা ছিল অভিষেকের। নেতা আসবেন বলে কথা। সকাল থেকেই স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মন্দির চত্বর সাজিয়ে ফেলে। চারিদিকে সাজোসাজো রব। তবে সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই উঠে আসে ভিন্ন চিত্র।
হঠাৎই মতুয়া সম্প্রদায়ের কিছু মানুষের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পরে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ। যা দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যান সকলে। ভেঙে ফেলা হয় অভিষেকের জন্য তৈরি করা তোরণও। এলাকার বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের মদতেই এই ঘটনা ঘটানো হয় বলে তৃণমূলের অভিযোগ।
পরে বিকেলে ঠাকুরনগর পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তার আগেই পরিস্থিতি এতটাই হাতের বাইরে চলে যায়, যে মূল মন্দিরের ফটক বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তাই মূল মন্দিরে ঢুকতে না পেরে পাশের মন্দিরে গিয়ে পুজো সারেন অভিষেক। সব সেরে বাইরে এসে শান্তনু ঠাকুরকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘মতুয়াধাম কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আমি তিন মাস পর আবার এখানে আসব। পারলে আটকান দেখান।’
এরপর অভিষেক এলাকা ছাড়তেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল-বিজেপি সমর্থকেরা। অভিষেক ঠাকুরনগর ছাড়ার পরই তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষ শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনায় দুই পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হন।
এরপর সেই ঝামেলা গড়ায় হাসপাতাল পর্যন্ত। তৃণমূল ও বিজেপি, নিজেদের কর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও মারামারি শুরু হয়। শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীদের আক্রমণ করে তৃণমূলকর্মীরা, এমনটাই অভিযোগ করা হয়। ঘটনাস্থলেই দু’পক্ষের ধস্তাধস্তির দরুন বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া আহত হয়েছেন। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যেও চলে ঝামেলা, হাতাহাতি।
এরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছোন শান্তনু ঠাকুর। তৃণমূলের ওপর অভিযোগ তুলে সরব হন তিনি। এবার এই কাণ্ডের জল গড়ালো আদালত পর্যন্ত। অভিষেক ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গেলেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। আগামীকাল মামলার শুনানি।