‘২০১৩-র চেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করাতে হবে ভোট’, রাজ্যকে ফের ধাক্কা দিয়ে নির্দেশ হাইকোর্টের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২৩ পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে অশান্তি। আর মনোনয়ন পর্বে তো রীতিমতো রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছিল বঙ্গ। নির্বাচন পূর্বেই একের পর এক প্রাণহানি, বেলাগাম হিংসা। এবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ আদালতের। ২০১৩-র চেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) দিয়ে করাতে হবে ভোট’, রাজ্যকে ফের ধাক্কা দিয়ে নির্দেশ হাইকোর্টের।

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব জেলায় পর্যাপ্ত বাহিনী চাইতে হবে কমিশনকে।” বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর (Suvendu Adhikakri) করা মামলাতে কমিশনকে ফের ধাক্কা দিয়ে জানিয়ে দিল হাইকোর্ট। কার্যত ফের একবার আদালতে মুখ পুড়লো রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের।

ভোটের আগে ১৫ দিনে ৮ মৃত্যু, তাও বাহিনীতে অনীহা কমিশনের! কেন এহেন আচরণ, এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ও কমিশন। গতকালই হাইকোর্টের নির্দেশে শীলমোহর দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তদারকিতেই করাতে হবে নির্বাচন।

কোর্টের নির্দেশের পর কার্যত চাপে পড়ে পঞ্চায়েত ভোটে জেলাপ্রতি মাত্ৰ ১ কোম্পানি কেন্দ্ৰীয় বাহিনী চেয়েছে কমিশন। যেখানে একদফায় গোটা রাজ্যে এত বড় নির্বাচন, সেখানে ১ কোম্পানি কেন্দ্ৰীয় বাহিনী দিয়ে কতটা নিরাপত্তা, সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব! এই প্রশ্ন তোলে আদালত।

আদালতের নির্দেশের পরেও কেন কেন্দ্রীয় বাহিনীতে অনীহা কমিশনের, এর পেছনে কারণ কী! কার্যত এইসকল প্রশ্নেই বিদ্ধ রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল তা বাস্তবায়িত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং কমিশনার ব্যর্থ হয়েছেন বলে মন্তব্য করে আদালত।

এদিনের শুনানিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি বলেন,’ কমিশন সক্রিয় নয়, তাই কোর্টের নির্দেশ মানতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না।’ বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘কোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করতে সব পদক্ষেপ করছে কমিশন। ২০১৩-য় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য এই কমিশন সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছি না সেই কমিশনের স্বতন্ত্রতার কী হল?’

বিচারপতি আরও বলেন, ‘কোর্টের নির্দেশ ছিল গোটা নির্বাচন পর্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমরা কমিশনের উপরেই মূল্যায়নের ভার ছেড়েছিলাম। ১৭০০ না ৮ লক্ষ বাহিনী-সেটা ঠিক করা কী আদালতের কাজ? প্রাথমিকভাবে এই কেন্দ্রীয় বাহিনী অপর্যাপ্ত বলে মনে হচ্ছে। মানুষ প্রশাসনের উপর আস্থা হারালে ভোট করে লাভ কী? আমাদের কি কমিশনের নিরপেক্ষতায় সন্দেহ করা উচিত?’’

high court

অন্যদিকে, প্রধান বিচারপতির রোষের মুখে পড়েন নয়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। তাকে চূড়ান্ত ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে না পারলে পদ ছেড়ে দিন কমিশনার। না পারলে পদ ছাড়ুন, নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল।’


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর