বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশ ভারতবর্ষের (India) প্রভাব সর্বত্র বজায় ছিল। কথিত আছে, হাজার হাজার বছর আগে সমগ্র পৃথিবী শাসন করত ভারতীয়রা। তবে, এমন নয় যে ভারতের রাজারা যুদ্ধ করে সমগ্র পৃথিবীতে তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বরং এটি এজন্য বলা হচ্ছে কারণ হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, সৃষ্টির রচয়িতা ব্রহ্মা যিনি মনুষ্যের আদি পিতা মনুরও পিতা ছিলেন, (তাই, তাঁকে পরমপিতা বলা হয়) প্রাচীনকালে বিশ্বে তাঁর বংশধরদেরই প্রভাব বজায় ছিল।
মহাবিশ্ব সৃষ্টির জন্য তিনি সর্বপ্রথম সনক, সনন্দন, সনাতন ও সনৎকুমার নামের চারজন পুত্রের সৃষ্টি করেন। পাশাপাশি, তাঁর শরীরের অংশ থেকে, তিনি মনু এবং শতরূপা সৃষ্টি করেছিলেন। যাঁদের মাধ্যমে মানুষের উৎপত্তি ঘটে। হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্য অনুসারে, আজও যখন কোনো শুভকাজে বা পূজা পাঠে কোনো সংকল্প নেওয়া হয় সেখানেও ভারতের বর্ণনা রয়েছে।
চিন জম্বুদ্বীপের একটি অংশ ছিল: উল্লেখ্য যে, এই সেই জম্বুদ্বীপ যার সীমানা আজকের ভারত ছাড়িয়ে বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। শাস্ত্র অনুসারে, মনুর পুত্র প্রিয়ব্রত ছিলেন সমস্ত ভূখণ্ডের কর্তা। মহারাজ প্রিয়ব্রত তাঁর সাত পুত্রকে সাতটি দ্বীপের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এদিকে, অগ্নিধরাকে জম্বুদ্বীপের অধিপতি করা হয়। চিনও এই জম্বুদ্বীপের একটি অংশ ছিল। যাকে এখন ভারত বলা হয়। কথিত আছে যে, ইক্ষভাঙ্কু রাজবংশের রাজা মান্ধাতাও চিন শাসন করেছিলেন।
এই রাজারা চিন শাসন করতেন: সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভারতের সাথে চিনের সম্পর্ক মহাভারত যুগের সাথে জড়িত। বিশ্বের বৃহত্তম মহাকাব্য মহাভারতে চিনের প্রসঙ্গ বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। মহাভারতের আদি পর্বেও চিনের প্রসঙ্গ জানা যায়।
চিনের রাজা মহাভারতের সময়ে ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরের যজ্ঞে তাঁর অধীনতা স্বীকার করতে এসেছিলেন। এদিকে, পিতামত ভীষ্ম চিনকে ভারতীয় রাজা দ্বারা শাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। মহাভারতের বিভিন্ন পর্বে চিনের উল্লেখ রয়েছে। অন্যদিকে, কিছু জনশ্রুতি অনুসারে জানা যায় যে, আগে চিনের নাম ছিল হরিবর্ষ।বলা হয় যে, জৈন ধর্মগ্রন্থ “জম্বুদ্বীপ প্রজ্ঞাপ্তি” এবং “বিষ্ণু পুরাণ”-এ হরিবর্ষের উল্লেখ পাওয়া যায়।
পাওয়া গেছে প্রমাণ: এদিকে, কিছু রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ১৯৩৪ সালে চিনে খননের সময় কিছু প্রাচীন মন্দিরের অংশ পাওয়া গিয়েছিল। ঐতিহাসিকদের মতে, চিনের সমুদ্রমুখী শহর চোয়ানজো এবং তার আশেপাশের এলাকা ছিল হিন্দুদের তীর্থস্থান। আর এর থেকে বোঝা যায় যে, চিন অবশ্যই একটা সময়ে ভারতের অংশ ছিল।