বাংলা হান্ট ডেস্ক: সম্প্রতি আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সেখানেই তিনি সাক্ষাৎ করেন বিশ্বের কিছু শ্রেষ্ঠ শিল্পপতি এবং ধনুকুবেরদের সঙ্গে। আর সেই তালিকায় ছিলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কও (Elon Musk)। এদিকে মাস্কের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের পরেই ভারতীয় টেলিকম বাজারে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। মূলত, ইলন মাস্ক ভারতে তাঁর স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট পরিষেবা শুরু করতে চান। এমতাবস্থায়, প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।
এদিকে, এই পরিষেবা শুরু হলে ভারতের ইন্টারনেট পরিষেবায় এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে ভারতে থাকা Jio , Airtel-এর মতো অন্যান্য টেলিকম সেক্টরগুলিও কড়া প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, স্টারলিঙ্ক হল একটি যুগান্তকারী ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই সংস্থাটি সরাসরি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেয়। যার ফলে টাওয়ারের কোনো প্রয়োজন হয় না।
এমতাবস্থায়, মাস্ক ভারতে এই পরিষেবা শুরু করলে সরাসরি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন মুকেশ আম্বানি। সেক্ষেত্রে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনকুবের এবং এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তির প্রতিযোগিতা পরিলক্ষিত হতে পারে। কারণ, বর্তমানে আমাদের দেশের সবথেকে বৃহৎ টেলিকম সংস্থা হল Relaince Jio। ইতিমধ্যেই মাস্ক প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে, তিনি ভারতে স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট পরিষেবা লঞ্চ করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত আগ্রহী। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব বলেও জানান তিনি।
এর পাশাপাশি, ভারতে মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলার কারখানা তৈরির বিষয়টিও সামনে আসে। এদিকে, ভারতের টেলিকম সেক্টরে মাস্কের এন্ট্রির আগেই মুকেশ আম্বানির সাথে তাঁর মতবিরোধের বিষয়টিও প্রকাশ্যে এসেছে। মূলত, মাস্ক জানিয়েছেন যে, ভারত স্পেকট্রাম নিলামের পরিবর্তে গ্লোবাল ট্রেন্ড অনুযায়ী লাইসেন্স বন্টন করুক। যদিও, এই বিষয়টি মানতে নারাজ মুকেশ আম্বানি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এর আগে ২০২১ সালে মাস্ক ভারতে স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট পরিষেবা লঞ্চ করার চেষ্টা করেছিলেন। যদিও সেটি সফল হয়নি। তবে, ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করলেও এক্ষেত্রে মাস্ককেও হতে হবে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন। কারণ, ভারতে ইতিমধ্যেই Jio-র ৪৪ কোটি টেলিকম গ্রাহক রয়েছেন। পাশাপাশি, ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীদেরও ২৫ শতাংশ দখল রয়েছে Jio-র কাছে।
এদিকে, বর্তমান সময় বিশ্বের প্রতিটি বড় সংস্থার চোখ রয়েছে ভারতের দিকে। কারণ ভারতীয় বাজারে বিপুল চাহিদার বিষয়টি বজায় থাকে। এমতাবস্থায় সম্প্রতি দেশে Apple Store-এর পথচলাও শুরু হয়েছে। যেগুলি ইতিমধ্যেই সাফল্য হাসিল করেছে। যার ফলে এটা প্রমাণ হয়ে যায় যে, ভারতীয় বাজারে চাহিদার উপর ভর করে প্রবেশ করলেই লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাই এই সুযোগটিকেই কাজে লাগাতে চাইছেন ইলন মাস্ক।