পশ্চিমবঙ্গে হুহু করে বাড়ছে সবজির দাম! এক কেজি লঙ্কা, বেগুনের দাম শুনলে মাথা ঘুরে যাবে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার শহর কলকাতার (Kolkata) বাজারে শাকসবজি (Vegetable) কিনতে গিয়েই রীতিমতো কালঘাম ছুটছে সবার। শুধু তাই নয়, ক্রমাগত বেড়ে চলেছে সেগুলির দাম। এমনকি, সবথেকে চিন্তার বিষয় হল মাত্র সপ্তাহখানেকের মধ্যেই শাকসবজির দাম ছাড়িয়েছে ১০০ টাকার গন্ডি। যার ফলে বাজারে আসা ক্রেতাদের পকেটে যে ভালোই টান পড়ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিকে, অদ্ভুতভাবে কলকাতার গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট এবং মানিকতলা বাজারের তুলনায় বাইরের বাজারে দাম অনেক বেশি রয়েছে জিনিসপত্রের। এদিকে, পরিস্থিতি বর্তমানে এতটাই বেগতিক হয়ে গিয়েছে যে, এবার এহেন দামের পরিপ্রেক্ষিতে নজরদারি কমিটি ও টাস্কফোর্সের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। এমতাবস্থায়, শিয়ালদহ বাজারের এক পাইকারি বিক্রেতা জানালেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে আসায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।”

পাশাপাশি, একজন ক্রেতা জানিয়েছেন, “আপাতত বেগুন ১৫০ টাকা, টমেটো ১২০-১৫০ টাকা, মটরশুঁটি ২০০-২০০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ৩০০ টাকা এবং করলা ১৪০ টাকায প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। টাটকা সবজি বাজারে কিনতে যাওয়ার যে আনন্দ তাতে অনেকদিন ধরেই ভয় ধরেছে। রান্নাঘরের তালিকা থেকে শাকসবজি বাদ দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছি আপাতত। এখন আলুর ওপরেই ভরসা।”

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে পঞ্চায়েত ভোটের উত্তাপের আবহে গ্রামবাসী থেকে শুরু করে কৃষকরা সকলেই প্রায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেক এলাকার লোকজন প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন। পাশাপাশি, কেউ কেউ আবার নির্বাচনী লড়াইয়ে নামছেন। এমন পরিস্থিতিতে, বেঙ্গল ভেন্ডর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল দে জানিয়েছেন, “এই পরিস্থিতির পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। অতিরিক্ত গরম এবং বৃষ্টির অভাবের ফলে ফসলের ফলন খারাপ হয়েছে। মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ উৎপাদন উপলব্ধ রয়েছে। পাশাপাশি, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। গ্রামবাংলার মানুষ পঞ্চায়েত সদস্যদের বাইরে কিছুই জানেন না। ভোটের পরেই পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।”

এদিকে, খামারের মালিকরা পাইকারি সবজি বাজারে তাঁদের ফসলের জন্য ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না। মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালরা সবজি বাজারে পণ্য আনতে আসছেন না। এই যোগাযোগের অভাব স্বাভাবিকভাবেই দাম বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে। তাই, ভোটের আগে এই পরিস্থিতি হয়তো এভাবেই বজায় থাকবে।

 Vegetable prices are increasing in West Bengal.

এমতাবস্থায়, কোলে বাজারের পাইকারি বিক্রেতা গোপাল সোনকার জানিয়েছেন, “এবার রাজ্যে ফলন এতটাই কম যে, অন্যান্য রাজ্য থেকে উৎপাদিত পণ্যের ওপর নির্ভরতা বহুগুণ বেড়েছে। গাড়িরও ঘাটতি রয়েছে।” এদিকে, ভাঙড়ের কৃষক আব্দুল মোল্লা জানান যে, তিনি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি তাঁর ১৪ বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেন। তবে, এবার সবাই ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকায় তাঁরা শ্রমিক খুঁজে পাচ্ছেন না।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর