বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে প্রথাগতভাবে চাকরির পথে না হেঁটে অনেকেই ব্যবসার (Business) প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। পাশাপাশি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তৈরি হয়েছে, একাধিক ব্যবসায়িক উপায়ও। যেগুলি অল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে শুরু করে দুর্দান্ত উপার্জন করা সম্ভব। এমনকি অনেকেই আবার চাকরির পাশাপাশিও এই ব্যবসাগুলি শুরু করেন। এমনিতেই বর্তমান সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) আত্মনির্ভরতার ডাক দিয়েছেন দেশজুড়ে। এমতাবস্থায় এইসব ব্যবসা শুরু করে পাওয়া যায় সরকারি সুবিধাও।
মূলত আমাদের দেশের খেলনার বাজারে এতদিন চিনের রমরমা জারি ছিল। যদিও বর্তমানে সেই সময়টা অনেকটাই পাল্টেছে। সর্বোপরি ভারতে তৈরি খেলনা এখন পৌঁছে যাচ্ছে আমেরিকা এবং ইউরোপেও। যার ফলে এক লাফে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে চাহিদা। এটি এমন একটি বাজার যেখানে প্রতিনিয়তই বিপুল চাহিদা পরিলক্ষিত হয়। তাই এই ব্যবসা শুরু করার মাধ্যমে আপনি ভালো অঙ্কের উপার্জন করতে পারবেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না।
এইভাবে করতে পারেন শুরু: মনে রাখতে হবে যে, কোনো ব্যবসাই হঠাৎ করে বড় হয়ে যায় না। বরং পরিকল্পনামাফিক এগোলে পাওয়া যায় সাফল্য। পাশাপাশি বাজার সম্পর্কেও একটি সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। এমনিতেই সফট টয়েজ এবং টেডি বানানোর ব্যবসা বাড়িতে থেকেই শুরু করা সম্ভব। আপনি মাত্র ৪০ হাজার টাকা দিয়েই শুরু করতে পারেন এই ব্যবসা।
হবে ভালো উপার্জন: মূলত এই ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে দুই ধরণের মেশিন কিনতে হবে। এর মধ্যে একটি হল সেলাই মেশিন এবং অন্যটি হল হস্তচালিত কাপড় কাটার মেশিন। এছাড়াও প্রয়োজন হয় কাঁচামালের। এর মধ্যে হস্তচালিত কাপড় কাটার মেশিনের দাম হল প্রায় ৪,০০০ টাকা। অপরদিকে, সেলাই মেশিনের দাম পড়বে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। অন্যান্য খরচ বাবদ ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা ধরে বাকিটা থেকে কাঁচামাল কিনতে পারেন।
একদম প্রথমে আপনি ১৫০০০ টাকার কাঁচামাল কিনে খুব সহজেই ১০০ টি সফট টয় এবং টেডি বানাতে পারবেন। এমতাবস্থায় আপনি ৩৫ হাজার টাকার মধ্যেও এই ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। এদিকে সফট টয় এবং টেডি বর্তমান সময় বাজারে খুব সহজেই ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করা সম্ভব। অর্থাৎ, এর মাধ্যমে আপনি পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।
খেলনার আমদানি কমেছে, বেড়েছে রপ্তানি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, কয়েক বছর আগেও ভারতে বিক্রি হওয়া ৮৫ শতাংশ খেলনাই আমদানি করা হত। কিন্তু এখন আমেরিকা, ইউরোপ, জাপান, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে ভারতের খেলনা রপ্তানি করা হয়। শুধু তাই নয়, বিগত তিন-চার বছরে খেলনা আমদানি প্রায় ৭০ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। অপরদিকে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ভারতে ৩৭.১ কোটি ডলারের খেলনা আমদানি করা হয়। কিন্তু, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তা কমিয়ে ১১ কোটি ডলারে নামিয়ে আনা হয়। এদিকে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ভারত থেকে ২০ কোটি ডলারের খেলনা রপ্তানি করা হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সেই সংখ্যা পোঁছে যায় ৩২.৬ কোটি ডলারে। অর্থাৎ, যত দিন এগোচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে ততই চাহিদা বাড়ছে ভারতীয় খেলনার।