রক্ষকই ভক্ষক! চালানের ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করলেন খোদ পুলিশকর্মী, তুমুল চাঞ্চল্য রাজ্যজুড়ে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের সমাজে পুলিশকর্মীরা (Police) সর্বদাই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে নিয়োজিত থাকেন। যেকোনো সমস্যা থেকে শুরু করে বড় কোনো বিপদের সম্মুখীন, প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশকর্মীদের কাছেই সাহায্যের উদ্দেশ্যে ছুটে যান সবাই। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও জনগণকে সঠিকভাবে পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। যদিও, মাঝেমধ্যেই এমন কিছু ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে আসে যেখানে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশকর্মীদের ভূমিকাই। ঠিক সেইরকমই এক চাঞ্চল্যকর বিষয় এবার সামনে এসেছে।

এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, হরিয়াণার পালওয়াল জেলায় একজন পুলিশকর্মী ই-চালানের মাধ্যমে কাটা তিন কোটি টাকারও বেশি অর্থ রীতিমতো উধাও করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত পুলিশকর্মী জুয়া খেলে ওই সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে, জানা গিয়েছে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর নাম হল জনক। আজ তকের রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি গত কয়েক বছর ধরে পালওয়াল জেলায় পুলিশের চালান ব্রাঞ্চের প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন। এমতাবস্থায়, অভিযোগ উঠছে যে, ওই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলায় কাটা ই-চালানের অর্থ সরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জনক জমা দেননি। তার পরিবর্তে, তিনি সেই অর্থ তাঁর ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে থাকেন।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, যখন কারোর গাড়ির ই-চালান কেটে নেওয়া হয়, তখন তাঁকে জরিমানা বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ট্রাফিক পুলিশের কাছে জমা দিতে হয়। তারপর ওই চালান থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এদিকে, এক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে চালান সরাসরি আদালতে পাঠানো হয়। এমতাবস্থায়, রিপোর্টে বলা হয়েছে, ট্রাফিক পুলিশের কাছে জমা থাকা চালানের অর্থই আত্মসাৎ করেছেন ওই পুলিশকর্মী।

ভুয়ো ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ও স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে: মূলত, চালানের টাকা ব্যাঙ্কে না পৌঁছনোর কারণে তদন্ত করা হয়। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, মামলার তদন্তভার ডিএসপি সন্দীপ মোরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রায় দু’মাস ধরে চলা তদন্তের পর দেখা গেছে, চালান উইন্ডোতে নিযুক্ত পুলিশ সদস্য ই-চালানের অর্থ উধাও করে ফেলেছেন। অভিযুক্ত পুলিশকর্মী ভুয়ো ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ও স্ট্যাম্প ব্যবহার করে প্রায় ৩ কোটি ২২ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এদিকে, ২০২০ সালের জুন মাসে বিভিন্ন থানায় ই-চালান মেশিন থেকে কেটে নেওয়া ২ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার বেশি চালানও সরকারি অ্যাকাউন্টে জমা হয়নি।

The policeman embezzled 3 crore rupees from the Challan

অভিযুক্ত গ্রেফতার: এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী জনককে গত ২৮ জুন গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, অভিযুক্তের মোবাইল ফোন সহ চালানের অর্থের মধ্যে ৬১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকার জন্য অভিযুক্ত পুলিশকর্মীকে দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় যুক্ত থাকা দ্বিতীয় আসামি ওমবীরের খোঁজ চলছে বলেও জানা গিয়েছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর