বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছু সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টির জেরে বেহাল দশা উত্তরবঙ্গের (North Bengal)। একাধিক এলাকা জলমগ্ন, বন্যার পরিস্থিতি। এককথায় জেরবার জনজীবন। উত্তরের ভয়ঙ্কর অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এবার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে (Irrigation and Waterways Minister Partha Bhowmick) উত্তরবঙ্গে পাঠিয়েছেন মমতা। পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বে আলিপুরদুয়ার জেলার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসেছে বিশেষ প্রতিনিধি দল।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিবের তত্ত্বাবধানে ওই বিশেষ দল গতকাল আলিপুরদুয়ার জেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে। নেত্রীর কথা মতোই একাধিক জায়গায় গিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন মন্ত্রী। মঙ্গলবার সেখানেই ঘটল বিপত্তি। ফিল্ডে গিয়েই মহা বিপদে পড়লেন সেচমন্ত্রী।
এদিন জয়গাঁও-এর কুটিবাড়ি এলাকায় বাসরা নদীর ভাঙন পরিদর্শনে যান পার্থ ভৌমিক। আর সেখানে নদীর চড়ে হাটতে গিয়ে হঠাৎই হোঁচট খেয়ে পড়ে যান তিনি। যদিও তার সঙ্গে উপস্থিত সদস্যরা তাকে তাকে তৎক্ষণাৎ তুলে নেন। সূত্রের খবর, পড়ে গিয়ে মন্ত্রীর বাঁ’পায়ে সামান্য চোট লেগেছে।
অন্যদিকে একবার এই কাণ্ড হওয়ায় তারপর থেকে মন্ত্রীকে চর এলাকা থেকে ধরেই নামানো হয়। খুব বেশি কোনও চোট যে পাননি তা বোঝা যায় মন্ত্রীর স্বাভাবিক ভাবে হাঁটা দেখেই। গতকাল জয়গাঁও-এর বাসরা নদীর বাঁধ পরিদর্শনের পাশাপাশি মন্ত্রীর নেতৃত্বে জেলার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ পরিদর্শন করেন বিশেষ প্রতিনিধি দল।
গতকাল সিসামারা নদীর দুটি স্থানে ভাঙন পরিদর্শনে যান সেচমন্ত্রী। ২০১৬ সালে এই নদীর ওপর বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছিল সিন্থেটিক বাঁধ। যদিও বর্তমানে বাঁধের সিন্থেটিক অংশই ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে খরস্রোতা নদীর জলোচ্ছ্বাস। যার জেরে গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল ঢুকছে।
এই বিষয়ে সেচমন্ত্রী বলেন, ‘কোনওরকম তথ্য ও যোগাযোগ ছাড়াই জল ছাড়ছে ভুটান। যার জেরেই এই বানভাসী পরিস্থিতি। ভুটানের জল ছেড়েছে বলেই ডুয়ার্সের রায়ডাক, সঙ্কোশ, বাসরা, কালজানি, জয়ন্তী ও তোর্সা নদীতে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। তাই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’
তার কথায়, ‘প্রতি বছর ভুটানের বৃষ্টির জেরেই আলিপুরদুয়ার সহ জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এই বছর নদীর নাব্যতা কর্মে যাওয়ায় জেলার তোর্ষা, কালজানি শহ একাধিক নদীতে ভাঙন হয়েছে। ক্ষতির মুখে কয়েক হাজার মানুষ। দেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন শুনছেন না।’ পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা জন বার্লাকে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ভুটানের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে আসতে বলেন সেচ মন্ত্রী।