বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই ভারতের (India) চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan -3) পৃথিবী থেকে চাঁদের উদ্দেশ্য তার সফর শুরু করেছে। এমতাবস্থায়, বহুকাঙ্ক্ষিত চন্দ্রযান-৩-এর সফল উৎক্ষেপণ প্রশংসিত হচ্ছে সর্বত্র। এদিকে, ISRO (Indian Space Research Organisation)-র পাশাপাশি দেশের বেসরকারি সংস্থাগুলিও এই মিশনকে সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যার মধ্যে অন্যতম হল টাটা স্টিল (Tata Steel)। উল্লেখ্য যে, টাটা স্টিল দেশের অন্যতম পুরোনো ব্যবসায়িক সংস্থা। এছাড়াও টাটা গ্রুপের কোম্পানিগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান সংস্থা এটি। মূলত, চন্দ্রযান-৩ কে মহাকাশে নিয়ে যাওয়া রকেটটি উৎক্ষেপণের জন্য যে ক্রেন ব্যবহার করা হয়েছিল তা টাটার কারখানায় তৈরি হয়েছিল।
লঞ্চে ব্যবহৃত ক্রেন তৈরি করেছে টাটা: ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে টাটা স্টিলের তরফে চন্দ্রযান-৩-এর সফল উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে ISRO-কে অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়েছে, “এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয় যে টাটা স্টিলের তৈরি ক্রেন অন্ধ্রপ্রদেশের সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে লঞ্চ ভেহিক্যাল LVM3 M4 (ফ্যাট বয়)-কে অ্যাসেম্বল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।” গত বুধবার সংস্থার তরফে এক বিবৃতিতে এই সহযোগিতার কথা জানানো হয়েছে। জামশেদপুরের টাটা গ্রোথ শপে এই ক্রেনটি তৈরি করেছে টাটা স্টিল।
১৪ জুলাই চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করা হয়: উল্লেখ্য যে, গত ১৪ জুলাই, ২০২৩-এ, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) চন্দ্রযান-৩ লঞ্চ করেছিল। এদিকে, চন্দ্রযানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট রাঁচির হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন প্রস্তুত করেছে। এছাড়াও, গোদরেজ গ্রুপের কোম্পানি গোদরেজ অ্যারোস্পেসও এই মিশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এমতাবস্থায়, টাটা স্টিলের জামশেদপুরের কারখানায় তৈরি অত্যাধুনিক ক্রেন যেটি এই মিশনকে সফল করতে সাহায্য করেছে সেটি হল ইলেকট্রিক ওভারহেড ট্রাভেলিং (EOT) ক্রেন। এই ক্রেনটি তৈরির পর উৎক্ষেপণের আগে সেটিকে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়।
কবে শুরু হয় টাটা স্টিলের পথচলা: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, টাটা গ্রুপের কোম্পানি টাটা স্টিল তার বিবৃতিতে আরও জানিয়েছেন যে, “চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণে নিজেদের অবদানের মাধ্যমে আমরা ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং উন্নয়নের জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি পালন করছি।” উল্লেখ্য যে, জামশেদপুরে টাটা স্টিল প্ল্যান্ট স্বাধীনতার আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। আগে এটি টিসকো নামে পরিচিত ছিল। ১৯০৭ সালে ভারতের প্রথম লোহা ও ইস্পাত কারখানা হিসেবে এটির পথচলা শুরু হয়। এরপর থেকেই জামশেদপুরকে সবাই টাটা নগর হিসেবে বিবেচিত করত। তবে এই কারখানায় স্টিল আয়রনের উৎপাদন শুরু হয় ১৯১২ সালে।
ইঞ্জিন এবং থ্রাস্টার সরবরাহ করেছিল গোদরেজ: ISRO-র চন্দ্রযান-৩ মিশনে, টাটার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য বড় বেসরকারি সংস্থাগুলিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মুম্বাইতে স্থিত বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা গোদরেজ অ্যারোস্পেস চন্দ্রযান-৩-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরবরাহ করেছিল। সংস্থাটি চন্দ্রযানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রস্তুত করেছে। মূলত, চন্দ্রযানের রকেট ইঞ্জিন এবং থ্রাস্টার তৈরি করেছে গোদরেজ অ্যারোস্পেস।
এই প্রসঙ্গে কোম্পানির বিজনেস হেড মানেক বেহরামকামদিন লঞ্চের দিন জানিয়েছিলেন, “আমরা খুব গর্বিত যে আমরা চন্দ্রযান-৩-এ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছি। আমরা ISRO-র বিশ্বস্ত অংশীদার হয়েছি এবং ভবিষ্যতে লঞ্চ, মিশন এবং মহাকাশ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখব।”