বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন এক ব্যক্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যাঁর সম্পর্কে জেনে রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন সবাই। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই তিনি তৈরি করে ফেলেছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য। মূলত, আজ আমরা জুপল্লী রামেশ্বর রাও (Jupally Rameswar Rao)-এর সাথে আপনাদের পরিচয় করাবো। তিনি একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।
যদিও, কোনো ব্যবসায়িক ডিগ্রি ছাড়াই, তিনি আজ একটি বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য পরিচালনা করেন। এমনকি, সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল তিনি এখন ১১,৪০০ কোটি টাকারও (১.৪ বিলিয়ন ডলার) বেশি সম্পদের মালিক। এক কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া রামেশ্বরের ছোটবেলা আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে অতিবাহিত হলেও গত বছর তিনি বিলিয়নেয়ার ক্লাবে প্রবেশ করেন। তাঁর এই সাফল্যের সফর শুরু হয়ে ৫০,০০০ টাকার একটি বাজি ধরার মাধ্যমে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, হায়দ্রাবাদের জুপল্লীতে বেড়ে ওঠা রামেশ্বর রাওকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের জন্য কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হত। প্রথম থেকেই তিনি বড় কিছু করতে চেয়েছিলেন। তবে, সেই সুযোগ তাঁর কাছে তখন ছিল না। এমতাবস্থায়, তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হওয়ার পেশাটি বেছে নিয়েছিলেন।
এদিকে, ১৯৭৪ সালে যুবক রামেশ্বর তাঁর গ্রাম থেকে হায়দ্রাবাদে এসেছিলেন। সেখানেই বেশ কয়েকটি বড় টার্নিং পয়েন্ট এবং একটি অপ্রত্যাশিত সুযোগ তাঁর সাফল্যের কাহিনির পথ প্রশস্ত করেছিল। মূলত, তিনি কলেজে একজন ছাত্রনেতা ছিলেন। সেখানে দল গঠনের দক্ষতা রপ্ত করেন রামেশ্বর। পাশাপাশি, রাও হায়দ্রাবাদের তৎকালীন তথাকথিত অনুন্নত এলাকা দিলসুখ নগর এলাকায় বসতি স্থাপন করেছিলেন।
সেখানেই তিনি তাঁর হোমিওপ্যাথি ক্লিনিক শুরু করেন। কিন্তু আশির দশকে, রিয়েল এস্টেটে আগ্রহী তাঁর হোমিওপ্যাথি ক্লায়েন্টরা তাঁকে একটি সুযোগ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করেন। একটি জমির উপর ৫০,০০০ টাকার বাজি ধরার ফলে রাওয়ের সাফল্যের গতিপথে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। মাত্র তিন বছরে তিনি তার বিনিয়োগের তিনগুণ রিটার্ন পেয়ে যান। যা তাঁকে দারুণ সম্ভাবনার লক্ষ্য দেখিয়েছিল।
এমতাবস্থায়, রাও রিয়েল এস্টেটে সময় দেওয়ার জন্য হোমিওপ্যাথি প্র্যাকটিস ছেড়ে দেন। ১৯৮১ সালে, তিনি তার প্রথম সংস্থা মাই হোম কনস্ট্রাকশন শুরু করেছিলেন। পরবর্তী কয়েক দশকে, রাও শহরের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় উঠে আসেন।
রেসিডেন্সিয়াল সোসাইটি থেকে শুরু করে কমার্শিয়াল বিল্ডিং নির্মাণের পাশাপাশি, রাও তাঁর ব্যবসা সিমেন্ট উৎপাদন পর্যন্ত প্রসারিত করেন। তাঁর সংস্থা মহা সিমেন্ট দক্ষিণ ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। যার বার্ষিক টার্নওভার ৪,০০০ কোটি টাকারও বেশি। এমতাবস্থায়, রামেশ্বর রাও আজ তাঁর চার পুত্র এবং চার পুত্রবধূর সহায়তায় বিশাল সাম্রাজ্য পরিচালনা করছেন।