দর্প হল চূর্ণ! রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দকে নিয়ে কুৎসা করায় নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন অমোঘ লীলা

বাংলা হান্ট ডেস্ক : কিছুদিন আগেই স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda) এবং রামকৃষ্ণ (Ramkrishna) পরমহংস দেবের দর্শনকে কটাক্ষ করে জনতার রোষানলে পড়েছিলেন ইসকন (Iskcon) দ্বারকার সহ-সভাপতি অমোঘ লীলা দাস (Amogh Lila Das)। এই হিন্দিভাষী ব্রহ্মচারীর বক্তব্যে কার্যত ঝড় উঠেছিল দেশজুড়েই। বিশেষ করে বাংলার মানুষ তো একেবারেই মেনে নিতে পারেননি। অমোঘ লীলা তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেও, মানুষ তাকে ক্ষমা করতে নারাজ।

ঘটনাটি গোটা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়তেই ইসকনের তরফ থেকে জানানো হয় যে, প্রায়শ্চিত্তের জন্য অমোঘ লীলাকে বৃন্দাবনে পাঠানো হয়েছে। একমাস যাবৎ সেখানেই থাকবেন তিনি। তবে মানুষের দাবি ছিল, মহাপুরুষদের অপমান যখন তিনি ভরা সভার মাঝে করেছেন তখন ক্ষমাও তাকে প্রকাশ্যেই চাইতে হবে।

আর এইদিন সেটাই করলেন ঐ সাধু। একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন অমোঘ লীলা দাস। এইদিন ঐ সাধু জানিয়েছেন, দর্শকদের কোনও একজনের প্রশ্নের জবাবে ওই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তবে সে ব্যাপারে তিনি অনুতপ্ত। কাউকে আঘাত দেওয়ার কোন অভিপ্রায় নাকি তার ছিলনা। সেই কারণেই তিনি অন্তর থেকে ক্ষমাপ্রার্থী।

তবে তিনি যে কারণেই বলে থাকুন না কেন, সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে বাঙালিরা তার কথা মানতে নারাজ। নেটিজনদের একাংশের মতে, ভক্তদের হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য ও তাতে ইসকনের ভূমিকা বোঝাতে গিয়ে সরাসরি রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের দর্শনকেই খাটো করেছিলেন তিনি। এই দুই মহাপুরুষের বানীর অপব্যাখ্যাও করেছেন তিনি। পাশাপাশি তার বাচনভঙ্গিও ঠিক ছিলনা বলে দাবি অনেকের।

আসলে এইদিন অমোঘ লীলা রামকৃষ্ণের ‘যত মত তত পথ’ বাণীকে উদ্ধৃত করে এমন ব্যাখ্যা দিয়ে বসেন যা রীতিমতো হাস্যকর বলেই মনে করছেন অনেকে। পরমহংস দেব তার এই বাণীর মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, ঈশ্বরকে পেতে গেলে একই রাস্তা অনুসরণ করতে হবে এমন কোন মানে নেই। একেক মতের মানুষ একেক পথ ধরে এগোতে পারেন। কিন্তু শেষে সেই একই অভীষ্ঠে পৌঁছবেন তারা।

ramkrishna vivekananda

এই বিষয়টিকেই কটাক্ষের ছলে অমোঘ লীলা বলে বসেন, ‘যে রাস্তা দিয়ে ইচ্ছে যাওয়ার বেরিয়ে পড়ো, গন্তব্য একই হবে। সেটা কখনই হয় না। আমি যদি মায়াপুর যেতে চাই, তবে ডান-বাম-আগে-পিছে যে কোনও রাস্তা ধরে যাওয়া সম্ভব নয়। একটি নির্দিষ্ট রাস্তা ধরতে হবে।’ পাশাপাশি বিবেকানন্দের বাণী নিয়েও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। অমোঘ লীলা বলেন, “কোনও সিদ্ধপুরুষ কখনও কোনও প্রাণী মেরে খাবেন না। বিবেকানন্দ যদি মাছ খান তবে কীভাবে তিনি সিদ্ধপুরুষ হবেন?” সাথে গীতাপাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলা ভালো, এই কথারও ভুল ব্যাখ্যা করে বসেছিলেন ঐ সাধু। কার্যত তারপরেই ওঠে নিন্দার ঝড়।


Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর