বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে বঙ্গে হাজারো প্রকার দুর্নীতির (Scam) রমরমা। কয়লা পাচার, গরু, পাচার থেকে শুরু করে স্কুল, পুরসভায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সরগরম রাজ্য। আর অবশ্যই রাজনীতি। এরই মধ্যে আচমকা রাজ্যে দুর্নীতি মামলায় চর্চার শিরোনামে রুশ মডেল বান্ধবী। ইডি সূত্রের দাবি, কয়লা পাচারের টাকা রাজ্যের এক প্রভাবশালী নেতার মাধ্যমে বিদেশে তার রুশ বান্ধবীর কাছে গচ্ছিত রয়েছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, দুর্নীতির টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে এ রাজ্যের ‘প্রভাবশালী’ নেতার (Influential Leader) কাছ থেকে পৌঁছেছে তার রুশ ‘বান্ধবী’র (Russian girlfriend) কাছে। ওই ‘বান্ধবী’ আবার পেশায় ‘মডেল’, বর্তমানে লন্ডনের বাসিন্দা। এবার দুর্নীতি মামলায় বিদেশিনী যোগের খবর সামনে আসতেই কে এই প্রভাবশালী? সে নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। রাজ্য জুড়ে সে নানান জল্পনা।
ওদিকে গতকাল বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) এই রুশ মডেলের প্রভাবশালী বন্ধুর বিষয়ে প্রশ্ন করতেই বিরোধী দলনেতার একেবারে স্পষ্ট জবাব, ‘কোন ভাইপোর পশ্চিম বাংলায় ক্ষমতা আছে, বিদেশে টাকা পাঠানোর ও রুশ বান্ধবী রাখার! রেজিস্টার্ড ভাইপো কে? তোলাবাজ ভাইপো কে? কয়লা ভাইপো কে? ভাইপো ছাড়া কে ঘন ঘন বিদেশ যায়! কার ক্ষমতা আছে ১০০ কোটি টাকা পাচারের। আপনি খুঁজতে থাকুন।’ কারও নাম উল্লেখ না করলেও শুভেন্দুর ইঙ্গিত কোনদিকে তা যেন সকলের কাছে স্পষ্ট।
ওদিকে শুধুই যে বিজেপি থেকে এহেন ইঙ্গিত মিলেছে তেমনটা নয়, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও (Md. Salim) এই নিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে পোস্ট করে। ED সূত্রে মেলা তথ্য, রুশ বান্ধবী ও এরাজ্যের প্রভাবশালী ‘বন্ধু’কে নিয়ে তিনি লেখেন,’ নাম না জানালেও এই আন্তর্জাতিক মাফিয়ার পরিচয় স্পষ্ট। ১) ঘনঘন দুবাই যাত্রা ২) কয়লা পাচার, ৩) ৭৫:২৫ অনুপাত ৪) হাওয়ালা etc।’
প্রসঙ্গত, ইডি জানতে পেরেছে, হাওয়ালার মাধ্যমে প্রথমে পাঠানো হয়েছে পশ্চিম এশিয়ার এক দেশে। তারপর ওই দেশে কয়েকটি ভুয়ো সংস্থা বানিয়ে তাতেই বিনিয়োগ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। খোলা হয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তদন্তে নেমে সেইসব অ্যাকাউন্ট ঘেঁটেই রুশ মডেলের খোঁজ পায় ইডি। গোয়েন্দাদের দাবি, ওই মডেলের অ্যাকাউন্টেও জমা পড়েছে ওই টাকা।
সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই রুশ মহিলাকে নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা গেছে এবং তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিষয়ে খোঁজ চলছে বলে ইডি সূত্রে খবর। ‘প্রভাবশালী’র সঙ্গে ওই মডেলের এখনও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও খবর। শুধু তাই নয়, ইডি সূত্রের দাবি, শুধু ওই মহিলা নন, তার সহযোগী কয়েক জনের কাছেও দুর্নীতির টাকা ঘুর পথে পৌঁছেছে। তদন্তকারীদের ধারণা সেই টাকার পরিমান ছুঁতে পারে ১০০ কোটির গন্ডি।