সামান্য প্রসাদ খেলেই সারে সব রোগ! বাংলার এই প্রাচীন মন্দিরে ভিড় জমান আট থেকে আশি

বাংলাহান্ট ডেস্ক : কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। আর সেই বিশ্বাস থেকেই ভক্তরা ভিড় জমান বড়ঞা মুকুটেশ্বর শিব মন্দিরে। বিভিন্ন জায়গা থেকেই ভক্তরা এই ভোলানাথের দর্শনে বেরিয়ে পড়েন শৈব তীর্থ ক্ষেত্রের উদ্দেশে। কথিত আছে এই মন্দিরের প্রসাদ খেলে নাকি সেরে যায় সমস্ত রোগ। সোমবারের পাশাপাশি রবিবার ভক্তদের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো।

সেই বিশ্বাসেই শ্রাবণ মাসে দূরদূরান্ত থেকে এই গ্রামীণ শিব মন্দিরে ছুটে আসে হাজার হাজার ভক্ত। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার বড়ঞা ব্লকের অন্তর্গত মসড্ডা গ্রাম গড়ে উঠেছে ১৮ টি পাড়া নিয়ে। গ্রামের মাঝামাঝি গড়ে উঠেছে শিব মন্দির। কালের অবক্ষয়ে সেই মসড্ডা গ্রামের আয়তন কমেছে। তবে মুকুটেশ্বর শিবমন্দির আজও স্বমহিমায় বিরাজমান।

এদিকে, কীভাবে এই মুকুটেশ্বর শিব মন্দির তৈরি হল তা নিয়ে নানান রোমাঞ্চকর কাহিনী প্রচলিত আছে। মন্দিরের সেবায়েতরা তাঁদের পূর্বপুরুষের মুখে যে গল্প শুনেছেন তা-ই বছরের পর বছর ধরে লোকের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে এসেছে। কথিত আছে প্রায় দুশো বছর আগে বাঘডাঙ্গার রাজারা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সূত্রের খবর, মুকুট ঘোষ নামে গ্রামের এক গো পালক নিয়মিত তার গোয়ালের সমস্ত গরুকে ওই জঙ্গলে নিয়ে যেতেন।

কিন্তু একদিন তিনি লক্ষ্য করলেন, একটি গাইগরু বাড়িতে এসে শুধু যে দুধ দেয়না তাই নয় এমনকি, জঙ্গলে যাওয়ার পর তাকে অন্য গরুর সাথেও দেখা যায় না। কিন্তু ঘন জঙ্গলে মুকুট ঘোষ ওই গরুটার সন্ধান করারও সাহস পেলেননা। এমনভাবে বেশ কিছুদিন চলার পর মুকুট ঘোষের কাছ থেকে সবকিছু শুনে গ্রামের বাসিন্দারা ঠিক করেন, তাঁরা ওই গরুটির পিছু নিয়ে সকলে জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করবেন।

গভীর জঙ্গলে ঢুকে তাঁরা দেখতে পান, এক জায়গায় দাঁড়িয়ে নিজে থেকেই দুধ দিচ্ছে ওই গরুটি। এতো দুধ দিয়েছে যে সেই এলাকার মাটি ভিজে গেছে। মুকুট ও গ্রামে ওর লোকেরা সেই দিন চলে আসলেও পর দিন বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে মুকুট একাই জঙ্গলের মধ্যে ওই স্থানের মাটি খুঁড়তে শুরু করেন। কিছুটা গর্ত খোঁড়ার পর তিনি দেখতে পান একটি শিবলিঙ্গ উঠে আসছে।

img 20230808 19231051

এরপর স্বপ্নাদেশ পেয়ে বাঘডাঙ্গা রাজপরিবারের এক সদস্যের উদ্যোগে ২০ ফুট চওড়া ও ২২ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ৩২ ইঞ্চি দেওয়াল দিয়ে মন্দির নির্মাণ হয়। এখানে পূজো দিয়ে তাঁদের মনস্কামনা পুরণ হয় বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। যেকোন পুরুষ বা মহিলার ধাতু ঘটিত কোন সমস্যা থাকলে, এই মন্দিরের বিশেষ ঔষধ নিলে সেই সমস্যার সমাধান হয় বলেই কথিত আছে।

 

 

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর