বাংলা হান্ট ডেস্ক : অবশেষে কি ডানা ছাঁটা হবে ভারতের ভারতের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India)? নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব। সংসদের বাদল অধিবেশনে নয়া বিল আনছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার (Narendra Modi Government)। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় (Rajya Sabha) বিলটি উত্থাপিত হবে। সেটি পাস হলে, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর রাখা হবে না সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Elections 2024) আগে এই নয়া বিল পাস করানোর উদ্যোগ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় তোলা হতে পারে চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড আদার ইলেকশন কমিশনার্স বিল ২০২৩। তাতে প্রস্তাব রয়েছে যে, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী দ্বারা মনোনীত একজন মন্ত্রী। কমিটির বৈঠক ডাকবেন প্রধানমন্ত্রীই। সেখান থেকে নাম যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। তিনিই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন। (Election Commissioner Appointment)।
নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে এ বছর মার্চ মাসেই গুরুত্বপূর্ণ রায় শোনায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনার নিয়োগের কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তাঁদের সুপারিশ মেনে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় নাকচ করতেই এই নয়া বিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব থাকা এই বিলটি রাজ্যসভায় তোলা হচ্ছে জানাজানি হতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি সংঘাতের পথে হাঁটছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
সাম্প্রতিক কালে একাধিক বিষয়ে দেশের সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার, সে দিল্লির আমলা নিয়োগ সংক্রান্ত বিতর্কিত অর্ডিন্যান্স হোক বা বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া। দিল্লিতে আমলা নিয়োগের ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের হাতেই থাকবে বলে রায় দেয় আদালত। তার পরেও অর্ডিন্যান্স জারি করে নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ রাখে কেন্দ্র। অতি সম্প্রতি সেই বিলও পাস করিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। তাতেই এবার নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে এই বিল।
এ ব্যাপারে তৃণমূলনেত্রী এখনও প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে সূত্রের দাবি, তৃণমূল সংসদের দুই কক্ষে এই বিলের জোরদার বিরোধিতা করবে। শুধু তৃণমূল বিরোধিতা করবে তাই নয়, এ ব্যাপারে ২৬টি দলের সমষ্টিগত ইন্ডিয়া (India) জোট এবং নবীন পট্টনায়েক, জগন্মোহন রেড্ডি, কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মতো মুখ্যমন্ত্রী তথা তাঁদের দল যাতে আপত্তি জানায় সেই দৌত্যেও নামার প্রস্তুতি শুরু হতে চলেছে।
রাজ্যসভা সূত্র খবর, আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল সংসদে এই প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। জানা যাচ্ছে, প্রধান বিচারপতির জায়গায় একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্যানেলে যুক্ত হবেন।