বাংলা হান্ট ডেস্ক : প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে ভারতীয় রেল (Indian Railways)।জানা যাচ্ছে, এরই মধ্যে রেলের অপারেটিং রেশিও নেমে গিয়েছে ১০৭.৩৯ শতাংশে। অর্থাৎ ১০০ টাকা আয় করতে তাদের খরচ হচ্ছে ১০৭ টাকা ৩৯ পয়সার কাছাকাছি। কলকাতা মেট্রোর (Kolkata Metro) হাল তো খারাপ বটেই পাশাপাশি সামগ্রিক ভাবে আর্থিক দৈন্যে ভুগছে অশ্বিনী বৈষ্ণবের (Ashwini Vaishnaw) রেল মন্ত্রক (Rail Ministry)। ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষের রিপোর্ট বলছে রেলের নিট ঘাটতি ১৫,০২৫ কোটি টাকা।
আসলে সদ্যই সংসদে ২০২১-২২ সালের রেলের আর্থিক অবস্থা সংক্রান্ত যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিএজি (কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল)। তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২১-২২ সালে রেলের ‘অপারেটিং রেশিও’ দাঁড়িয়েছে ১০৭.৩৯ শতাংশ। যদিও এর আগের বছর এতটা বেহাল দশা ছিলনা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে অপারেটিং রেশিও’ ছিল ৯৭.৪৫%। গত পাঁচ বছরেএই প্রথম একশোর ঘর ছাপিয়ে গেল তা।
সিএজির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০-২১ সালে যেখানে ২,৫৪৭ কোটি টাকা লাভের মুখ দেখেছিল রেল, সেখানে ২০২১-২২-এর ক্ষতি এসে দাঁড়িয়েছে ১৫,০২৫ কোটি টাকায়। রেলের সতেরোটি জোনের মধ্যে ‘অপারেটিং রেশিও’-এর হিসাবে সবথেকে খারাপ স্থানে রয়েছে মেট্রো রেল। সিএজি রিপোর্টে বলা হয়েছে, সার্বিক ভাবেই আর্থিক স্বাস্থ্যক্ষয়ের কারণে ধুঁকছে ভারতীয় রেল।
এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি প্রসঙ্গে সিএজি তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে খরচের খাতায় গেছিল ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। গত বছরের তুলনায় এই অঙ্কটা প্রায় ৩৫ শতাংশ। তবে খরচ হলেও রোজগার আর সেইভাবে বাড়েনি। আর এটাই নাকি রেলের এই বিধ্বস্ত অবস্থার মূল কারণ। রেল সূত্রে খবর, এই অঙ্কের সিংহভাগ (৭৫ শতাংশ) টাই নাকি খরচ হয়েছিল কর্মীদের পিছনে।
পাশাপাশি নতুন লাইন নির্মাণ, ডাবলিং, ট্রাকের মেরামতি ও বন্দে ভারতের মতো ট্রেনসেট নির্মাণে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করে পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে খরচ বাড়ানো হয়েছে। এখন এই আর্থিকভাবে টালমাটাল পরিস্থিতিকে সামাল দিতে ভাড়া বাড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় দেখছেনা অশ্বিনী বৈষ্ণবের রেল মন্ত্রণালয়।
এদিকে ভাড়া বাড়তে পারে মেট্রো রেলেরও। কারণ রেলের সতেরোটি জোনের মধ্যে ‘অপারেটিং রেশিও’-এর হিসাবে সবথেকে খারাপ স্থানে রয়েছে মেট্রো রেল (Metro Rail)। এইমুহুর্তে মেট্রো থেকে ১০০ টাকা রোজগার করতে হলে খরচ করতে হচ্ছে ৪৩২ টাকা। মেট্রো রেলের অপারেটিং রেশিও (২০২১-২২) দাঁড়িয়েছে ৪৩২.১৯%। যা অবশ্য গত অর্থ বর্ষের (৬৭৭.৯০%) চেয়ে অনেকটাই কম। এমতাবস্থায় ক্ষতি কমাতে যাত্রিভাড়ায় সংস্কার করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে রিপোর্টে।