বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের সফল শিল্পপতিদের তালিকায় রতন টাটা (Ratan Tata) রয়েছেন একদম প্রথমসারিতেই। শুধু তাই নয়, ভারতের বর্ষীয়ান এই ধনকুবের তাঁর সহজসরল-অনাড়ম্বর জীবনযাপনের মাধ্যমে সবাইকেই আকৃষ্ট করেছেন। এমনকি তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকার পাশাপাশি বর্তমান সময়ে দেশের নবীন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আর সেই কারণেই যত দিন এগোচ্ছে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে রতন টাটার অনুরাগীর সংখ্যা।
তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে রতন টাটার জীবনের এমন এক কাহিনীর বিষয়ে জানাবো যেটি জানার পর রীতিমতো চমকে উঠবেন প্রত্যেকেই। মূলত, একবার টাটা মোটরসকে টার্গেট করা এক গ্যাংস্টারের মুখোমুখি হতে হয় রতন টাটাকে। পাশাপাশি, রতন টাটার ওই অভিজ্ঞতা রোমন্থনের একটি ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৮০-র দশকের গোড়ার দিকে। যখন রতন সদ্য টাটা সন্সের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। মূলত, ওই গ্যাংস্টার টাটা মোটরস থেকে টাকা তোলার চেষ্টা করছিল। এই প্রসঙ্গে টাটা জানান, “আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পনেরো দিন পর, আমাদের টাটা মোটরসে ইউনিয়নে একটি বড় সমস্যা হয়।” রতন টাটা বলেন, “একজন বহিরাগত গ্যাংস্টার মনে করেছিল যে, আমাদের ইউনিয়নে যথেষ্ট পরিমাণে সম্পদ রয়েছে এবং সে সেটির নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। তার সাথে প্রায় ২০০ জন ছিল। যারা ছিল বিঘ্নকারী, হিংসাত্মক এবং ভীতিপ্রদর্শক। যদিও, সেই প্ল্যান্টের বাকি ৪,০০০ জন আগ্রহী ছিল না।” মূলত, এই প্রসঙ্গে ২০১৫ সালে শেয়ার করা ভিডিওটি কলম্বিয়া বিজনেস স্কুল ফের পোস্ট করায় সেটি আরও একবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: বড় খবর! এবার ভারতের বর্ষীয়ান শিল্পপতি রতন টাটাকে এই বিশেষ পুরস্কার দিচ্ছে সরকার
এদিকে, গ্যাংস্টারকে খুশি করতে পারে এমন কিছু করার অনেক পরামর্শ পাওয়ার পরেও, টাটা অন্য পথ বেছে নিয়ে তার মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। টাটা বলেন, “পুরো বিষয় এটা ছিল যে, ওই লোকটি ইউনিয়ন দখল করতে চেয়েছিল এবং আমরা তাকে তা করতে দিতাম না। তাই, আমরা তার মুখোমুখি হয়েছি।”
আরও পড়ুন: এমনিতেই খান খুব অল্প! তবুও রতন টাটার পছন্দের খাবারের তালিকায় রয়েছে এই ৫ টি পদ
শুধু তাই নয়, ওই গ্যাংস্টার তার নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার জন্য ধর্মঘটেরও ডাক দেয়। যার ফলে টাটা মোটরসের প্ল্যান্টের কর্মীরা তাদের নিরাপত্তার ভয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। তারপরে রতন টাটা ব্যক্তিগতভাবে কর্মীদের দায়িত্ব এবং উৎপাদন পুনরায় শুরু করার জন্য বেশ কয়েক দিন প্ল্যান্টে অবস্থান করেছিলেন।
শিল্পপতির মতে, ওই গ্যাংস্টার টাটা মোটরসের ৪০০ জন কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার জন্য লোকদের নিয়ে এসেছিল এবং পুলিশ “তার পকেটে ছিল”। তবে রতন টাটার সঠিক পদক্ষেপ এবং ধৈর্যের ফলে ওই গ্যাংস্টার ধরা পড়ে। মূলত, ওই পরিস্থিতিতে টাটার অধ্যবসায় ছিল তাঁর সাফল্যের চাবিকাঠি। তিনি গ্যাংস্টারের হুমকির কাছে হার মানতে রাজি হননি। বরং তিনি প্ল্যান্টে অবস্থান করে কর্মীদের তাঁদের দায়িত্ব পুনরায় শুরু করার জন্য উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে সাহস দেখিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তিনি আরও জানান “আমি অন্য কোনো উপায়ে এটি কখনোই করতাম না।”