বাংলা হান্ট ডেস্ক: তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে থাকা পাকিস্তানের (Pakistan) শোচনীয় অবস্থা এবার ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। জানা গিয়েছে, বিদেশের দূতাবাসে নিযুক্ত আধিকারিকদেরও বেতন দেওয়ার মতো টাকা নেই পাকিস্তানের। যে কারণে গত তিন মাস ধরে কয়েকটি ডিপ্লোমেটিক মিশনে নিয়োজিত পাকিস্তানি আধিকারিকদের বেতন দেওয়া হয়নি। মূলত, বিদেশে পোস্টিং হওয়ার কারণে সেইসব আধিকারিকদের বেতন দেওয়া হয় ডলারে। এদিকে, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার দীর্ঘদিন ধরেই ভালো জায়গায় নেই। যার ফলে শুধু আমদানির ক্ষেত্রেই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি বরং, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) কাছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট প্যাকেজও ভিক্ষা করতে হয়েছে সেই দেশকে।
জুন থেকে বেতন ছাড়াই কাজ করছেন ওই আধিকারিকরা: এই প্রসঙ্গে দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, আমেরিকা এবং হংকং-এ কর্মরত প্রেস অ্যাটাচে-রা ছাড়াও সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত প্রেস কাউন্সেলররা গত জুন মাস থেকে বিনা বেতনে রয়েছেন। এদিকে, পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে যে, দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার সীমা ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। তাই চলতি মাসের বেতনও দেওয়া যাচ্ছে না। এর অর্থ হল ওয়াশিংটন, হংকং এবং সিঙ্গাপুরের মতো অত্যন্ত ব্যয়বহুল শহরে কর্মরত পাকিস্তানি আধিকারিকদের চার মাস বিনা বেতনে কাজ করতে হবে।
চলছে দোষারোপের পালা: এমতাবস্থায়, পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রক বলছে যে এই বিষয়ে তথ্য মন্ত্রক দায়ী। কারণ, তারা প্রকৃত চাহিদা অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল বরাদ্দ করেনি। গত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষেও এই বিষয়টি সামনে এসেছিল। কিন্তু তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ইশহাক দার মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক সমন্বয় কমিটিতে সম্পূরক অনুদান/প্রযুক্তিগত সম্পূরক অনুদানের মাধ্যমে কর্মচারীদের বেতনের বিধানের বিষয়ে অনুমোদন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: আমাদেরই রাজ্যে রয়েছে ভারতের সবথেকে বড় দু’টি রেল স্টেশন! নাম জানলে হয়ে যাবেন অবাক
আধিকারিকদের কাছে সন্তানদের ফি দেওয়ার মতো টাকাও নেই: এদিকে, সামগ্রিক পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় হয়ে গিয়েছে যে, ওই আধিকারিকদের কাছে সন্তানদের ফি দেওয়ার মতো টাকাও অবশিষ্ট নেই। এমন পরিস্থিতিতে একজন আধিকারিক জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁর সন্তানদের স্কুল থেকে একটি সতর্কতা পেয়েছেন যে এই মাসে ফি পরিশোধ না করা হলে সন্তানদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি, আরও অনেকে বলেছেন, সময়মতো বেতন না পেলে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হবেন তাঁরা। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।
আরও পড়ুন: একসময় এই দেশের কাছে ছিল পৃথিবীর অর্ধেক সোনা, আজ অনাহারে কাটছে দিন! কারণটা পরিস্থিতি
পাকিস্তান তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, পাকিস্তান বিগত কয়েক মাস ধরে মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। পাশাপাশি, ডলারের ঘাটতির কারণে পাকিস্তান বিদেশ থেকেও পণ্য আমদানি করতে পারছে না। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারে মাত্র ২ মাসের আমদানির অর্থ অবশিষ্ট রয়েছে। এমতাবস্থায়, সরকার শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করছে এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করছে। পাকিস্তান আশা করছে যে, আগামী কয়েক বছরে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে।