কলকাতাতেও চাই! বার্সা ভক্ত সৌরভকে নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে দাবি মমতার

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ ফুটবল বিশ্বের সেরা ক্লাবের নাম কি? এই প্রশ্নটা উঠলে শতকরা ৯০ ভাগ লোকের মুখে একটাই উত্তর হিসাবে একটাই নাম উঠে আসবে। আর সেই নামটা হল রিয়াল মাদ্রিদ (Real Madrid)। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, লুকা মদ্রিচ, করিম বেনজেমার মতো বর্তমান যুগের কিংবদন্তি থেকে শুরু অতীতের ফুটবল যুগের আলফ্রেডো দি স্টেফানো, ফেরেঞ্চ পুস্কাস, জিনেদিন জিদানরা এই ‘সান্তিয়াগো বার্নাব্যূ’-তেই (Santiago Bernabeu) দাপিয়ে বেরিয়েছেন। শনিবার ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Sourav Ganguly) সাথে নিয়ে সেখানেই হাজির হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee)।

১২১ বছর পুরনো ক্লাবের ঐতিহাসিক ট্রফি রুম, সবুজ গালিচার মতো মাঠ, মিউজিয়াম, অত্যাধুনিক স্টেডিয়াম সবকিছুই ঘুরে দেখেন দাদা ও দিদি। স্পেনের অহংকার বলে পরিচিত এই ফুটবল ক্লাবের জৌলুস দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দুজনেই। লা লিগা থেকে শুরু করে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, সব ক্ষেত্রেই বছরের পর বছর দাপট দেখিয়ে গিয়েছে ক্লাবটি। শুধুমাত্র ইতিহাস আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকা নয়, সাফল্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে কি করে জড়িয়ে থাকতে হয়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ হল রিয়াল মাদ্রিদ।

এদিন আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রী স্পেনের এই বিখ্যাত ক্লাবের যাওয়া নির্ধারিত হয়েছিল। বিষয়টি পরিকল্পিত ছিল না। ক্লাবে পৌঁছানোর পর যে ফুটেজ বা দৃশ্য গুলি দেখা গেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে একদম মুখ্যমন্ত্রী এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে ক্লাবের ইতিহাস প্রশ্ন সম্পর্কে বুঝিয়ে বলছেন। মনোযোগী ছাত্রদের মতো সেই সমস্ত কথা শুনছিলেন দিদি ও দাদা।

রিয়ালের স্টেডিয়াম দেখে সৌরভ এবং মমতা দুজনেই মুগ্ধ হয়েছেন। মমতা ব্যানার্জি নিজে স্বীকার করে নিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো দেখতে এসেছিলেন তারা। ভবিষ্যতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যূ-র মতো স্টেডিয়াম কলকাতাতেও তৈরি করা সম্ভব কিনা বা যুবভারতীকে এই রূপ দেওয়া সম্ভব কিনা সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন তিনি। গোটা ব্যাপারটা আছে তার কাছে অত্যন্ত নতুন ছিল, সেটা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।

mamata with sourav

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার ভক্ত। কিন্তু স্টেডিয়াম পরিদর্শনের ভিডিও ফুটেজ বা ছবিতে তার মুখেও দেখা গিয়েছে বিস্ময়। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্লাবে স্টেডিয়াম কিছু সময় আগেই নতুন রূপ পেয়েছে এবং তারপর সেখানে যুক্ত রয়েছে বৃষ্টি বা অন্য প্রয়োজনে ছাদ ঢেকে দেওয়ার বন্দোবস্ত। তার পাশাপাশি ফুটবল বাদে অন্য কোনও ইভেন্টের জন্য যখন মাঠ ভাড়া দেওয়া হবে, তখন মাঠটির সবুজ গালিচা থাকে, থাকে ভাগ করে অটোমেটিক পদ্ধতিতে সরিয়ে ওই নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের জন্য অন্য একটি প্লাটফর্মকে ওপরে নিয়ে আসার পরিকাঠামো দেখে তারা হয়ে গিয়েছিলেন হতবাক। যদিও ভারতের বা বাংলার যারা ফুটবল নিয়মিত ফলো করেন তাদের কাছে আধুনিকতার এই ব্যাপারটা নতুন কিছু নয়।

আরও পড়ুন: স্পেন সফরে বড় চমক মমতার! ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থেকে হলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টেডিয়ামটির যাবতীয় পরিকাঠামো সম্পূর্ণ করতে আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেটা শেষ হলে নতুন করে তৈরি এই স্টেডিয়ামটির আধুনিকীকরণের জন্য সম্পূর্ণ খরচ দাঁড়াবে ভারতীয় মুদ্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এমন অঙ্কের টাকা যে ভারতীয় ফুটবলের ক্ষেত্রে অন্তত এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বিনিয়োগ করা সম্ভব না সেটা সকলেই বোঝেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সফরকারী দলের এক অন্যতম সদস্য তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, যিনি রিলায়েন্স গোষ্ঠীর সঙ্গেও যুক্ত, তাকে স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই মমতা বলেন, ‘মুম্বইয়ে আপনারা যা করেছেন সেটা আলাদা। কিন্তু এই রকম একটা স্টেডিয়ামে বা এর থেকে ছোট হলেও চলবে, তা কলকাতায় মাটিতে তৈরি করে দিতেই হবে।’

 

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর