বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত ৭ অক্টোবর, ইজরায়েলের (Diesel) ওপর আচমকাই হামলা চালায় প্যালেস্তাইনের (Palestine) সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হামাস (Hamas)। এদিকে, এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যোগ্য উত্তর দেয় ইজরায়েলও। হামাসের একের পর এক ঘাঁটিকে রীতিমতো ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইজরায়েল জনসংখ্যা ও আয়তনের বিচারে খুবই ছোট একটি দেশ। তবে সামরিক দিক থেকে ইজরায়েল অত্যন্ত শক্তিশালী।
ইজরায়েলের শক্তি পুরোনো: জানিয়ে রাখি যে, ইজরায়েল চারদিক থেকে শত্রু দ্বারা বেষ্টিত। কিন্তু যারাই এই দেশের সাথে এখনও পর্যন্ত লড়াই করেছে তারা সবাই পরাজিত হয়েছে। ১৯৪৮ সালে ইজরায়েল গঠনের সাথে সাথে, ৮ টি প্রতিবেশী দেশ একসাথে ইজরায়েলকে আক্রমণ করেছিল। কিন্তু ইজরায়েলি সেনাবাহিনী একাই তাদের সবাইকে হটিয়ে দেয়। বলা হয়, ৮ টি দেশের সেনাবাহিনী একসঙ্গে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেনি।
মূলত, ইজরায়েল হল একটি ইহুদি দেশ এবং তার প্রতিবেশী সব দেশই মুসলিম। এদিকে, প্রতিবেশী অধিকাংশ দেশের সাথে ইজরায়েলের শত্রুতা রয়েছে। ১৩ টি মুসলিম দেশ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে ওই দেশটি। যার মধ্যে রয়েছে মিশর, ইরাক, আলজেরিয়া, কুয়েত, সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন, লিবিয়া, মরক্কো, সৌদি আরব, প্যালেস্তাইন, সুদান এবং টিউনিসিয়ার মতো দেশ। এদিকে, ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের মধ্যে উত্তেজনার বিষয়টি অনেক পুরোনো। মূলত, প্রায় ২৩ লক্ষ প্যালেস্তাইন নাগরিকের আবাসস্থল গাজা স্ট্রিপ ২০০৭ সালে হামাস দ্বারা বন্দী হয়েছিল। এর এক বছর আগে তারা সেখানে সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়।
২০২১ সালেও উত্তেজনা বেড়েছিল: ২০২১ সালে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এরপর মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি, তারা উভয়েই একমত হয়েছিল যে, গাজায় বসবাসকারী নাগরিকদের ইজরায়েলে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। বিনিময়ে হামাসকে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: এবার মেট্রো রেলে লক্ষাধিক টাকা বেতনের চাকরির সুযোগ! এভাবে করুন আবেদন
ইজরায়েল ৬ দিনের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করে: ১৯৬৭ সালে মাত্র ৬ দিনে ৮ টি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয় ইজরায়েল। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৬৭ সালের ২৭ মে মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল নাসের ঘোষণা করেছিলেন যে, আরবের জনগণ ইজরায়েলকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছে। মে মাসের শেষের দিকে, মিশর ও জর্ডানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল যে, ইজরায়েল যদি উভয়ের মধ্যে একজনকেও আক্রমণ করে তবে অন্য দেশটি পাশে দাঁড়াবে। জুন মাসে ইজরায়েল-মিশর সীমান্তে যুদ্ধ শুরু হয় এবং শীঘ্রই তা আরবের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: ছেলে ডাক্তার, জামাই IPS! অথচ ফুটপাতে বসে বই বিক্রি করছেন এই মহিলা, কারণ জানলে শ্রদ্ধায় মাথা নত হবে
ইজরায়েল ও মিশরের মধ্যে সংঘটিত এই যুদ্ধে জর্ডান, মিশর, ইরাক, কুয়েত, সিরিয়া, সৌদি আরব, সুদান ও আলজেরিয়া মিশরকে সমর্থন করে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে। এই যুদ্ধ “জুন যুদ্ধ” নামেও পরিচিত। এই মুসলিম দেশগুলি ইজরায়েল আক্রমণের জন্য জর্ডানে তাদের সেনা ঘাঁটি তৈরি করেছিল। আক্রমণের সম্পূর্ণ পরিকল্পনাও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু তার আগেই ৫ জুন ইজরায়েলি বিমান বাহিনী প্রায় ৪০০ মিশরীয় যুদ্ধবিমানে হামলা চালিয়ে সেগুলি উড়িয়ে দেয়। এই কারণে শত্রু দেশগুলি ভীত হয়ে পড়ে এবং মাত্র ৬ দিনেই যুদ্ধ শেষ হয়। অর্থাৎ, ওই যুদ্ধে একইসাথে প্রায় ৮ টি দেশ ইজরায়েলের কাছে পরাজিত হয়েছিল। এই যুদ্ধটি ১৯৬৭ সালের ৫ থেকে ১০ জুনের মধ্যে হয়েছিল।
আসলে ইজরায়েল মনে করেছিল যে, জিততে হলে প্রথমেই আক্রমণ করতে হবে। সেই লক্ষ্যে জর্ডানের সেনা ঘাঁটিতে উপস্থিত ফাইটার প্লেনের ওপর দ্রুত হামলা শুরু করে ওই দেশ। এই যুদ্ধে প্রায় এক হাজার ইজরায়েলি সেনা প্রাণ হারান এবং আহত হন সাড়ে চার হাজার। তবে, আরবের দেশগুলিতে মৃতের সংখ্যা ছিল সবথেকে বেশি। এরপর বহুবার ইজরায়েল আক্রমণের মুখোমুখি হলেও প্রতিবারই শত্রুদের যোগ্য জবাব দিয়েছে তারা।