বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ এভাবেও ফিরে আসা যায়। যে দলটা বাংলাদেশের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হেরে অভিযান শুরু করেছিল তারাই যে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন এবং এইবারের বিশ্বকাপের (2023 ODI World Cup) জন্য ফেভারিট ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দেবে এটা কেউ কল্পনাও হয়তো করতে পারেনি। কিন্তু ঠিক এমনটাই হলো দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। ভারতের কাছে হারের পর আফগানিস্তান (Afghanistan Cricket Team) অধিনায়ক শপথ করেছিলেন যে তারা নিজেদের ভুল ত্রুটিগুলি শুধরে ঘুরে দাঁড়াবেন। ঠিক সেই কথা মতোই গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে ২০১৯ সালের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে (Afghanistan vs England) খেলতে নেমে তাদের ৬৯ রানের ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে আশা বাঁচিয়ে রাখলো আফগানিস্তান। ব্যাটিং এবং বোলিংয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ম্যাচের সেরা মুজিব-উর-রহমান (Mujeeb Ur Rahman)।
এদিন টস জিতে আফগানিস্তানকে প্রথমে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার। বিধ্বংসী ব্যাটিং করে ধামাকাদার ভাবে আফগানিস্তানের ইনিংস শুরু করেন কলকাতা নাইট রাইডার্স এর খেলে যাওয়া রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। ৫৭ বলে আটটি চার এবং চারটি ছক্কা সহ ৮০ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেন আফগান ওপেনার ও উইকেটরক্ষক। যদিও ম্যাচের ১৭ তম ওভারে ১১৬ রানের দলগত স্কোরের মাথায় ওপেনিং জুটি ভাঙ্গার পর আফগানিস্তান বিপাকে পড়েছিল।
কিন্তু এরপর এই বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা অনভিজ্ঞ ইক্রাম আলীখিল ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং ৬৩ বলে ৫৮ রানের একটি ইনিংস খেলে আফগানিস্তানকে রক্ষা করেন। শেষ দিকে চালিয়ে ব্যাটিং করে মুজিব-উর-রহমান ১৬ বলে ২৮ রানের একটি উপযোগী ইনিংস খেলে আফগানিস্তানকে পৌঁছে দেন ২৮৪ রানের স্কোর অবধি। ইংল্যান্ডের লেগস্পিনার আদিল রশিদ (Adil Rashid) এদিন অনেকটা চেষ্টা করেছিলেন দুই বিভাগেই লড়াই করার। দুর্দান্ত বোলিং করে আদিল (৩/৪২) এবং ফাস্ট বোলার মার্ক উড (২/৫০) আফগানদের রোখার চেষ্টা করেছিলেন আরও কম রানে। কিন্তু আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ের সামনে চূড়ান্ত অসহায় ছিলেন ক্রিস ওকস এবং গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের নায়ক স্যাম ক্যারান।
আরও পড়ুন: তেজি ঘোড়ার মতো ছুটছেন রোহিত! ভেঙে যাবে সৌরভ গাঙ্গুলীর এই অবিশ্বাস্য রেকর্ড
রান তারা করতে নেমে দ্বিতীয় ওভার থেকে উইকেট হারাতে শুরু করে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত শতরান করা ডেভিড মালান এদিন ৩২ রানের স্কোরে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। রুট (১১), বাটলার (৯), লিভিংস্টোনের (১০) মতো তারকারা আজ সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ২১তম ওভারে যখন ইংল্যান্ড নিজেদের পঞ্চম উইকেট হারিয়ে ফেলে তখন থেকেই দর্শকরা যেন অনুভব করতে পারছিলেন যে একটি অঘটনের আশঙ্কা রয়েছে।
কিন্তু মরিয়া হয়ে সেই অঘটনকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন ইংল্যান্ডের তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটের হ্যারি ব্রুক। ব্যাটিং করে ৬০ বলে ৬৬ রান করার পর সেই মুজিব-উর-রহমানই তাকে ড্রেসিংরুমে ফেরান। দুরন্ত বোলিং করছিলেন প্রাক্তন আফগান অধিনায়ক মহম্মদ নবীও (২/১৬)। ম্যাচ যত গড়াচ্ছিল ততই যেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন তারকা আফগান স্পিনার রশিদ খান। ইংল্যান্ডের হয়ে শেষদিকে যারা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছিলেন, তাকেই ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠাচ্ছিলেন তিনি। আদিল রশিদ আগ্রাসী ব্যাটিং করছিলেন। কিন্তু ১২ বলে ২০ রান করার পর আফগান রশিদ তাকে ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে দেন। শেষপর্যন্ত ৪১ তম ওভারে আসে সেই বহু প্রতীক্ষিত মুহূর্ত। মার্ক উড আক্রমণ করতে গেলে তাকে চমকে দিয়ে উইকেট ভেঙে দিয়ে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন রশিদ (৩/৩৭)। রুট এবং ব্রুকের উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের কোমর আগেই ভেঙে দিয়েছিলেন মুজিব। দুই বিভাগেই অসাধারণ পারফরম্যান্স করে তিনি হন ম্যাচের সেরা।
ফিরহাদ হাকিমের কুমন্তব্যে তোলপাড় রাজ্য! কুণাল বললেন ‘ওই বিপ অংশ…’