বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ আজ বিশ্বকাপ (2023 ODI World Cup) ফাইনালে যখন রোহিত শর্মাকে টসে হারিয়ে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স (Pat Cummins) ভারতীয় দলকে (Indian Cricket Team) প্রথমে ব্যাটিং করতে পাঠাচ্ছেন তখন অনেকেই খুব খুশি হয়েছিলেন। আশা করেছিলেন যে সেমিফাইনালের মতই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে (India vs Australia) এই ম্যাচে একটা বিশাল বড় রানের বোঝা চাপিয়ে দেবে ভারত। সেই সময়ে যদি ম্যাচের সেরা কে হতে পারেন এই প্রশ্ন করা হতো তাহলে ট্র্যাভিস হেডের (Travis Head) নাম কারোর মুখে আসতো না এমনটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, আর এক ব্যাপার।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামার পরে রোহিত শর্মা (৪৭) এবং বিরাট কোহলি (৫৪) কিছুটা আগ্রাসী ব্যাটিং করেছিলেন। কিন্তু লোকেশ রাহুল হাফসেঞ্চুরি করলেও তার একশোর বেশি বলের ইনিংসে তিনি মাত্র একটি চার মেরেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত ৬৬ রান করে আউট হন। কিছুটা মন্থর গতির পিচে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা অসাধারণ বোলিং করেছিলেন। বিশেষ করে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তোলার পাশাপাশি অত্যন্ত কৃপণ বোলিং করেছিলেন।
অনেক বিশেষজ্ঞরা আশা করেছিলেন যে এই মন্থর পিচে ভারতের স্পিনাররা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠবেন। ভারতীয় পেসাররা অসাধারণ ছন্দে রয়েছেনই। ভারত ২৪০ রানের টার্গেট ডিফেন্ড করতে পারবে, এমনটা বিশ্বাস ছিল সকলের। বাস্তবে দেয়া হলো সেটা সম্পূর্ণ অন্যরকম।
প্রাথমিকভাবে একটু রান বিলিয়ে দিলেও ভারতীয় পেসাররা নিজেদের ছন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন। ডেভিড ওয়ার্নারকে নিজের স্পেলের প্রথম বলেই স্লিপে কোহলির হাতে ক্যাচ তুলিয়ে ফেরত পাঠিয়েছিলেন। এছাড়া বুমরা, স্মিথ ও মার্শকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দিয়েছিল একটা সময়। তো ৪৭ রানে তিন উইকেট হারানো সত্ত্বেও চাপে পড়েননি ট্র্যাভিস হেড। এই বছরেই জুন মাসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম ইনিংসে অসাধারণ শতরান করে ভারতকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছিলেন তিনি। আজও তিনি ঠিক সেটাই করলেন। এর আগের রোহিত শর্মার অসাধারন ক্যাচ ধরে ছিলেন তিনি যেখান থেকে প্রথম ইনিংসের চিত্রটা পরিবর্তিত হতে শুরু হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে জ্বলে উঠলেন ব্যাট হাতে।
বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসেও অসাধারণ একটি শতরান করে তিনি ভারতের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠলেন। অথচ ইনিংসের শুরুর দিকে শামি এবং বুমরা তাকে বারবার বিপাকে ফেলেছে। কঠিন পিছে তার টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন ধারাভাষ্যকাররা। তো হেড নিজের মাথায় একটাই ব্যাপার ভেবে নিয়েছিলেন এবং সেটা হলো তাকে যেকোনো অবস্থায় ক্রিজে টিকে থাকতে হবে। আহমেদাবাদের পিচ ম্যাচ গড়ানোর সাথে সাথে ব্যাটিংয়ের জন্য সুবিধা হয়ে উঠে এটা চলতি টুর্নামেন্টে বারবার দেখা গিয়েছে। আজ ঠিক সেই ব্যাপারটা মাথায় রেখেই টসে যেতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কামিন্স। আর অসাধারণ শতরান করে অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচ জয়ের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়ে হেড যেন দেখাচ্ছেন তিনি শুরু থেকে চোটের জন্য খেলতে না পারলেও ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটা তুলে রাখার কাজটা ঠিকঠাক করে গেলেন।