বাংলা হান্ট ডেস্ক : আবারও একবার সংবাদ শিরোনামে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। বিগত কয়েকমাসে একটার পর একটা রেল দুর্ঘটনা নিয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। এছাড়া নতুন নতুন রেল রুট বা অসম্পূর্ণ রেলপথ নিয়ে চর্চা তো রয়েইছে। তবে এবার সংবাদ শিরোনামে চলে এল বাংলার (West Bengal) বুকে তৈরি হওয়া অসম্পূর্ণ এক রেলপথ।
ছাতনা-মুকুমণিপুর রেলপথ :
আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগেই ছাতনা-মুকুটমণিপুর (Chatna Mukutmanipur) রেলপথের ঘোষণা হয়েছিল। যদিও সেই কাজ এখন বিশ বাঁও জলে। কবে যে এই রেলপথ সম্পূর্ণ হবে তা বোধহয় খোদ রেল কর্তৃপক্ষও জানেনা। জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হলেও এখনও কাজ থমকে রয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
১৩ বছর আগে জম অধিগ্রহণের কাজ হয়ে গেছিল :
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য রেলের স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া প্রথম এই প্রকল্পের প্রস্তাবনা রেখেছিলেন। সেই মত শুরু হয় কাজ। আজ থেকে প্রায় ১৩ বছর আগে এই প্রোজেক্টের ৭০% জমি অধিগ্রহণের কাজও হয়ে গেছিল। তবে তারপরেই বন্ধ হয়ে যায় সবকিছু। যে কারণে গত শনিবার খাতড়ার এবিটিএ হলে গণ কনভেনশনের ডাক দিয়েছিল বাঁকুড়া-মুকুটমণিপুর রেলপথ স্থাপন আন্দোলন কমিটি।
আরও পড়ুন : ‘আমেরিকা-ইউরোপ থেকে ভারতে ফিরছেন ভারতীয় উদ্যোক্তারা!’ কারণ জানলে গর্ব হবে
দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে বাঁকুড়া বাসিন্দারা :
যদিও বাঁকুড়া জেলার বঞ্চিত বাসিন্দারা বহুদিন আগেই এই নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে রেল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তারা। তবে এতেও বিশেষ কিছু লাভ হয়নি। গত শনিবার সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, ‘রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন আমাদের দলের নেতা বাসুদেব আচারিয়া ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেল প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে উঠেপড়ে লাগেন।’
রাজ্য সরকারকে দুষছে সিপিএম :
তার সংযোজন, ‘সেই সময় জমি অধিগ্রহণের কাজও প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। অল্প কিছু জায়গায় সমস্যা ছিল। তবে তা কাটিয়া ওঠা কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়েই এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় থেকেই কেন্দ্র ও রাজ্য কেউই এই রেলপথ নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি।’
আরও পড়ুন : ‘এভাবে ধর্মীয় স্থান তৈরী হয় না, ওটা কালচারাল সেন্টার’ দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে তোপ শুভেন্দুর
প্রতিবাদে মুখর জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা
তবে বাঁকুড়া-মুকুটমণিপুর রেলপথ স্থাপন আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক মধুসূদন মাহাতোর অভিযোগ সরাসরি রাজ্য সরকারের দিকে। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে বাসুদেববাবুর পরাজয়ের পর এই প্রকল্প লাল ফিতের ফাঁসে আটকে গিয়েছে। রেল প্রতি বছর এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ করে প্রকল্পটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। সেই কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ হয়ে গেলেও বাকিটা হচ্ছে না।’
ছেড়ে কথা বললেননা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারও। তার অভিযোগ, ‘মুকুটমণিপুর রেলপথ আমাদের সবার কাছেই একটি স্বপ্নের প্রকল্প। দীর্ঘদিন হল এই প্রকল্পটি রেল বরাদ্দ করলেও কাজ এগোয়নি। আমাদের রাজ্য জুড়ে এমন অন্তত ৬১টি প্রকল্প রয়েছে, যেগুলি রেল বরাদ্দ করলেও রাজ্য সরকার জমি দিতে না পারায় কাজ এগোচ্ছে না।’